"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" ফজিলত, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ,



"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"

পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

আমরা সকলেই জানি এই আয়াত টির বাংলা অর্থ, কিন্তু এই আয়াত এর মধ্যে রয়েছে যে কতটা অলৌকিক নেয়ামত তা কি জানি?

বিসমিল্লাহির : আল্লাহর নামে,

রাহমানির রাহিম : পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু।

আরবি হরফ গুলো সাধারণত একটির সাথে অন্যটির সংযুক্তি বা ধারাবাহিকতা বজায় থাকে, এজন্যে এই ভাষার আন্তরিকতা অন্তরে অনুভব হয়, মনমুগ্ধ হৃদয়ে প্রশান্তি পাওয়া যায় আল্লাহর রহমতে।

 বিসমিল্লাহ  : (আল্লাহর নামে শুরু করা), যে কোন কাজের শুরুতে, খাওয়ার শুরুতে, কোনো কিছু পান করার আগে, ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার সময়, ঘরে প্রবেশের আগে, যানবাহনে উঠার আগে, বাজারে প্রবেশের প্রাক্কালে, রান্না শুরু করার সময়, কোনো কিছু কাটাকাটি করার আগে, অজু করার আগে, ঘর থেকে মসজিদের উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার সময়, এমনকি পবিত্র বাণী আল্ কুরআন পাঠের পূর্বেও এই কালাম পড়া/বলা বা জিকির করা প্রত্যেক মমিন মুসলমানের অবশ্যই সুন্নতি দায়িত্ব।

এর কতটুকু আমরা মনুষ্য সমাজে মেনে চলছি ? বা এর প্রচলন বাস্তবায়িত করতে পেরেছি।

ভেবে দেখুন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জাগ্রত অবস্থায় যদি কোন মানুষ, যে কোন কাজের শুরুতে "বিসমিল্লাহ" বলে, তাহলে তার সেই কাজ সহজ হয়ে যায়, আল্লাহর রহমত ও কল্যাণ বর্ষিত হতে থাকে, কোনো শয়তানি শক্তি সে কাজের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে না, সর্বদা আল্লাহর নেক নজরে থাকেন, এমনকি সেই নেক আমল কারী আল্লাহর ফেরেশতা দ্বারা সুরক্ষিত থাকেন।

বিসমিল্লাহ এমন একটি শব্দ, বান্দা তার রবকে স্বরণ করার সাথে সাথে পরম করুণাময় আল্লাহ খুশি হয়ে যান, তৎক্ষণাৎ তার ডাকে সাড়া দেন।

আল্ কুরআনের ১১৪ টি সূরা -র  মধ্যে ১১৩ টি সূরা-তেই "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" দিয়ে শুরু করা হয়েছে, পবিত্র আল্ কুরআনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বয়ং আল্লাহ পাক এই পবিত্র বাণীর যথার্থ মূল্যায়ন করেছেন।বান্দাদের ও আমলের মাধ্যমে এই পবিত্র বাণীর মূল্যায়ন করতে বলেছেন।

আল্লাহ পাকের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আদম, যদি সর্বাবস্থায় মহান রবকে স্বরণ করে এই পবিত্র বাণীর আমল করতো, আজ সারা জাহানে শয়তানের শক্তির বিকাশ ঘটত না।

সত্যি কথা বলতে কি, সারা দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই কোনো কাজের শুরুতে "বিসমিল্লাহ" শব্দের উচ্চারণ করে না, আল্লাহর নামে শুরু করছি এই পবিত্র কথাটি বলে না, বা বলার অভ্যাস করেনা, কেউ কেউ জানলেও সঠিক সময়ে বলতে মনে থাকে না।
আর কম সংখ্যক মানুষের মধ্যে, ওলামায়ে মাসায়েখ, শায়েখ, খতিব, মাওলানা, ইমাম, হাফেজ ও মাদ্রাসা, মসজিদ, ঘরে, অধ্যায়নরত/আমলরত, আল্ কুরআনের অনুসারী, নিষ্পাপ শিশুদের নেক আমলের জন্যেই দুনিয়া আজও বিরাজমান, সালাম এইসব নেক আমল কারীদের।

পরম করুনাময় আল্লাহ্ যে বান্দার প্রতি কতটা মেহেরবাণ  তার প্রমাণ পাওয়া যায় পবিত্র আল্ কুরআনের সূরা আল্ রহমান এ, আল্লাহ্ পাক বলছেন : আর্ রহমান - দয়াময় আল্লাহ্।

সূরা ফাতিহা - আর্ রহমানীর রাহিম - পরম দয়াময় ও অসীম দয়ালু,

আল্লাহ্ পাক সর্বপ্রথম বেহেস্ত থেকে আদমকে করুণা/দয়া করলেন, আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গের কারণে, মহান আল্লাহ করুনা/দয়া না করলে আদম (আঃ) দুনিয়াতে আসত না, আমার ও আপনার জন্ম হোত না, তাইতো আল্লাহ্ মেহেরবাণ, আল্লাহ্ পাক দয়ালু।

 রাহমানির রাহিম : ( ২ টি শব্দ ) রাহমান ও রাহিম।

শুধু রাহমান শব্দের অর্থ বিশ্লেষণ করতে গেলে লেখা শেষ হবেনা।

দয়াময়  অসীম দয়ালু আল্লাহ্ পাক এর করুণা ও দয়ার জন্যেই আজ আমরা মুসলমান এর ঘরে জন্মেছি, অমুসলিম-এর ঘরেও তিনি (আল্লাহ) আমাকে জন্ম/সৃষ্টি করতে পারতেন, দয়াময় রহমানের করূণায়/কৃপায় মুসলমানরা ধন্য, শুকরিয়া, বলুন আলহামদুলিল্লাহ।

শয়তানের কুমন্ত্রণায় বান্দা যদি কঠিন গুনাহও করেন, ক্ষমা চাইলে তিনি মাফ করেন, তাইতো তিনি দয়াময়

প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) কে, সর্বশেষ উম্মতের রাসুল হিসেবে প্রেরণ করা ও আমাদের উপর আল্লাহর রহমত।

আল্ কুরআন কে পথ প্রদর্শক ও সর্বশেষ আসমানী কিতাব হিসেবে প্রেরণ, ইনসানের উপর আল্লাহর রহমত, করূণা এবং দয়া।

১৮০০০ মাখলুকাত এর মধ্যে ইনসানকে সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ রূপদান, আমাদের প্রতি রাব্বুল আলামীনের কৃপা বা দয়া। কত মহান আমাদের রব

মাটি থেকে বিভিন্ন ফসল ও ফলমূল, শাকসবজি থেকে বান্দার জন্য রিজিকের সৃষ্টি-ও আদমের উপর আল্লাহর রহমত, দয়া ।

গাছ থেকে অক্সিজেন পাওয়া ইনসানের উপর আল্লাহর রহমত, সূর্য, চন্দ্র, আলো, বাতাস, পানি, নদী, সাগর, মহাসাগর, মাছ সহ হালাল পশু - প্রাণীর ভক্ষণ, বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ, দয়া ও রহমত ।

আকাশ থেকে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে জমিনকে উর্বর রাখা বান্দার জন্য রাহমানির রাহিম এর বিশেষ দয়া।

ইবলিশ শয়তানের অনুসারী পাপীষ্ঠ বান্দা কেও পথে ফিরে আসার অপেক্ষায় রিজিক দান কারী - একমাত্র আল্লাহ্ এটাও বান্দার প্রতি আল্লাহর রহমত ও দয়া ।

নেক ইনসানকে দুনিয়াতে সন্মান ও আখেরাতে জান্নাত দান, দয়াময় আল্লাহর বান্দার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার, রাহমানির রাহিম যে অসীম দয়ালু

মোটকথা : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর ফজিলত, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ লিখে শেষ করা যাবেনা।

পরম করুণাময়ের এই ঐশী বাণী আয়াত টিকে সারা জাহানের প্রতিটি ইনসান যদি নিজের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করতেন, দুনিয়া হোত শান্তিময়।

শেষ কথা : আল্ কুরআনে বর্ণিত সত্য বাণীকে প্রতিষ্ঠা করে, সত্য জ্ঞানে জ্ঞানী হওয়া প্রতিটি ইনসানের পবিত্র ফরজ দ্বায়িত্ব, রাসুল ( সাঃ) এর উম্মত হিসেবে পবিত্র কর্তব্য।

নিজ কথা : দোষক্রটি মার্জনাহেতু সত্য বাণী প্রতিষ্ঠিত করার সুন্নাত আদায় করি।

বন্ধুরা, পরবর্তী আয়াত - সূরা ফাতিহা শুরু, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বীল আলামীন, যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে বা পাশে থাকেন - সত্য জ্ঞান আবিস্কার করার, তাহলে ধারাবাহিক প্রচার করব ইনশাআল্লাহ

ধন্যবাদ।
@ আলহামদুলিল্লাহি রাব্বীল আলামীন: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি সারা জাহানের রব

"আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু"

Discover unknown truth in "THE HOLY QURAN"

MD KHALIL



আঊযুবিল্লাহি মিনাশ্শাইত্বোয়ানির রাজিম।

 




আঊযুবিল্লাহি মিনাশ্শাইত্বোয়ানির রাজিম। 


যে আয়াতটি মহাগ্রন্থ আল্ কুরআনে বর্ণিত হয়েছে সেই আয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ, আশ্চর্যের বিষয় হলো, এতবড় অশেষ রহমতে ভরা অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন, এই  বাক্যের অর্থ, ফজিলত, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ খুব কমই দেখা গেছে, 

আসুন দেখি পড়ে বুঝার চেষ্টা করি যে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ পাক আমাদের কি বোঝাতে চেয়েছেন;

 রাব্বী যিদনী ইলমা : হে রব (আল্লাহ) ইলম দান করুন,এই ৩ টি শব্দের অর্থের ও ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ অপরিসীম, যা আলোচনার জন্য বিশেষ প্রয়োজন।

পর্যায়ক্রমে আল্ কুরআনে বর্ণিত আয়াত থেকে ব্যাখ্যা, অর্থসহ বাস্তবজীবনে সত্য প্রতিফলিত বিচার বিশ্লেষণ নিয়ে আলোচনা করব, ইনশাল্লাহ অলৌকিক প্রশান্তিতে ভরে যাবে অন্তর, চলুন জান্নাতের পথে, অন্তরে অনুভব করুন সত্য যে কত সুন্দর, মিথ্যা যে কতটা ঘৃনীত।

১) আউযুবিল্লাহি : আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই,

২) মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম:শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে

তাহলে পুরো বাক্যটি কি হল - শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।

একবারও কি ভেবেছেন এ আরবি শব্দ গূলোতে কি বলছি, 

 আউযুবিল্লাহি: সারা জাহানের সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন ও মৃত্যু দানকারী, আসমান ও জমিনের সৃষ্টিকারী, শয়তান ও ইনসানের রুহুদানকারী,  মহান দয়ালু আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, এক আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, যিনি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালl

মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম :

সর্বপ্রথম যখন আল্লাহ পাক আদম সৃষ্টি করলেন, তখন থেকেই শয়তান আদমের প্রকাশ্য/ অপ্রকাশ্য শত্রু, আল্লাহ পাক এর কাছে কসম খাওয়া আদমের ১ নং দুশমন, এ কথা আমরা সকলেই জানি, কিন্তু গভীরে ঢুকে অনুভব করতে পারিনা।

শয়তান দুনিয়াতে আদমের সাথে শয়তানি করবেই, আর পরম দয়ালু আল্লাহ পাক তার  বান্দাদের প্রতি সহায় হবেন, আশ্রয় দিবেন, এমনকি আল্লাহ পাক এর বাহিনী (ফেরেশতা) দিয়ে পাহারা দেয়া হবে সেই বান্দাদের। 

কত বড় নেয়ামত এ অলৌকিক ৩ টি শব্দচয়ন-এ, এ তো গেল ইবলীশ শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাওয়ার গাইবী উপায়, বাস্তব দুনিয়াতে Indirectly শয়তান তার বিনাশ কার্যক্রম পরিচালনা করছে, আদমের মস্তিষ্কে ঢুকে পড়ছে,  সমস্ত কিছু যা খারাপ আছে ইনসানের জন্য, সব তার কাছে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করছে, আদমকে লোভনীয়, মিথ্যুক, অহংকারী করে তুলছে, সদা অপবিত্র থাকার ফলে আদম, শয়তানের কুমন্ত্রণায় তারচেয়ে-ও বড় শয়তান হয়ে যাচ্ছে, সে আদম সন্তান হয়ে যাচ্ছে নৃশংসতার নরপশু, পশুরাও এতটা পাশবিক নয়, যতটা মানুষ, ছোট থেকে বড় সব ধরনের গুনাহের কাজ শয়তানের কুমন্ত্রণায় নির্দ্বিধায়  করে যাচ্ছে, ক্রমাগত শয়তান তার দুনিয়া, আখেরাত নষ্ট করছে।

মানুষ মানুষের জন্য শান্তি বিনষ্ট কারী অসামাজিক জীব হয়ে উঠছে

ঘর থেকে দেখুন - অভাবের শয়তানি, স্বামী - স্ত্রীর মাঝে শয়তানি, ভাই - বোনের মধ্যে শয়তানি, বাজারে শয়তানি, অফিসে বাড়তি ইনকামের লোভে পড়ে শয়তানি, চা দোকানে গিবত করা শয়তানি, আরোও হাজারও ব্যাখ্যা আছে ইনসানের অপবিত্র থাকার ফলে শয়তানের কুমন্ত্রণার কার্যকলাপ সমন্ধে। খেলার মাঠে জয়ের শয়তানি, রাজনীতিতে ধর্ শয়তানি, পথে, ফুটপাতে ক্রয়/বিক্রয়ে শয়তানি

এমনকি এই ইবলীশ শয়তান মানুষের নামাজ আদায় করার সময়-ও অপ্রকাশ্য অন্তরে দিকভ্রষ্ট করায়, নামাজে বাধা দেয়, অন্তরে নানা ধরনের কুচিন্তা আনয়ন করে, বান্দাদের তার নেক আমল থেকে বিরত রাখার প্ররোচনা দেয়।

একবারও ভেবেছেন কি শয়তান আমাদের কি ভাবে চারিদিক থেকে নিরব ক্ষতিসাধন করছে?

এমন কোন জায়গা নেই যেখানে ইবলিশ প্রবেশ করতে পারে না, এই ক্ষমতা টুকুন ও ইবলিশ আল্লাহর কাছে চেয়ে নিয়েছিল, তবে যে রুহ দয়াময় আল্লাহর জিকির/ গুনগানে মগ্ন থাকবে সে রুহের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, এ কথা ও আমরা সকলেই জানি।

কিন্তু ভেবেছেন কি কয়টা রুহ পাক -পবিত্র থেকে আল্লাহর জিকির/গুনগান করছি ?

খুব কমই পাবেন, কিন্তু তাদের  নেক আমল এত ভারী যে তাদের জন্যই পুরো জাতি আল্লাহর রহমতের ছায়ায় থাকেন, সে জাতিকে আল্লাহ গজব দেন না।

আল্ কুরআনে  বর্ণিত : শয়তানের প্ররোচনায় মত্ত এমন অনেক জাতিকে আল্লাহ ধ্বংস করে দিয়েছেন, পুরো শহর উল্টে দিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোতে এরকম অনেক বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়।

তাহলে দেখুন, ইবলিশ মানুষের মধ্যে শয়তানি কুমন্ত্রণার কার্যকলাপ চালিয়ে যায়, ব্যাক্তি থেকে ঘর, পাড়া প্রতিবেশী, গ্রাম, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা, জেলা, শহর, বন্দর, মহানগর, ক্রমশই দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।

আমার/আপনার মহান রব, দয়াময় আল্লাহ যে গায়েবের - ও মালিক, আদমের সৃষ্টিলগ্ন থেকে কেয়ামত, তারপরে কবর, আখেরাত, বিচার দিবস, বেহেস্ত, দোজখ, শয়তান কে বলি দেওয়া, সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে শুধুমাত্র একক আল্লাহ্ থাকবেন।

গায়েবের রহস্য তিনি ছাড়া কে ভাল জানেন ?

সৃষ্টির শুরু থেকেই শয়তান আদমের প্রকাশ্য/অপ্রকাশ্য চির শত্রু জেনেই, মহান রব সর্বপ্রথম শয়তান থেকে রক্ষা পেতে এই বাণী আদমকে পড়তে বললেন, পরবর্তী সময়ে নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মাধ্যমে নাজিল হয়ে,পবিত্র আল্ কুরআনে প্রতিষ্ঠিত হয়।

ভেবেছেন কি ? এই ইবলীশ শয়তান পবিত্র আল্ কুরআন পাঠের সময় - ও মনুষ্য অন্তরে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে! তাইতো সবজান্তা মহান আল্লাহ এই পবিত্র বাণী বাক্যটিকে পবিত্র আল্ কুরআনে  রেখেছেন বা রাখার ব্যবস্থা করেছেন।

বান্দার মঙ্গলার্থেই দয়াময় আল্লাহ্ এ কাজটি করেছেন।

বান্দা যখন তার মালিককে ডাকে, তখন তিনি খুশি হয়ে যান, শয়তান চলে যায় নিরাপদ দূরত্বে, আল্লাহ্ পাকের নূরের আশ্রয়ে চলে যান সে ব্যাক্তি, সম্পুর্ন নিরাপদ।

আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম এর ফজিলত:

হাদীসে বর্ণিত: নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দেখলেন, দুজন ব্যক্তি একে অপরের সাথে প্রচন্ড ক্রোধে ঝগড়া করছিল, তিনি হযরত ওমর (রা:) কে বলে পাঠালেন যে, কেউ যদি এই আয়াত টি পাঠ করে তাহলে তার রাগ থেমে যাবে, ওমর (রা:) তাদের মাঝে গিয়ে  বললেন - কেউ যদি আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম বলে, তাহলে তার রাগ থেমে যাবে, একথা শুনে একজন বললেন, আমি কি পাগল হয়েছি, অন্যজন বলতেই - তার রাগ থেমে গেল।

ওমর (রা:) পরবর্তীতে এই আমলের মাধ্যমে নিজের ক্রোধকে দমিয়ে রেখেছিলেন, তিনি ও বুঝতে পেরেছিলেন যে ক্রোধ ইবলিশ শয়তানের অস্ত্র, তাইতো তার মত ক্রোধি মানুষ ও নিজেকে সামলে নিতেন, সবর করতেন, সহ্য করতেন এবং আল্লাহর জিকির এ থাকতেন।

অশেষ ফজিলত এ আয়াতে:

আল্লাহ পাক যদি আপনার/ আমার সাথে থাকেন, সর্বদা দেখভাল করেন, আর কি চাই, এক একটি অক্ষরে ১ থেকে ১০, ১০ থেকে ১০০, ১০০ থেকে ৭০০ গুন নেকী আল্লাহ দান করতে পারেন, অবশ্যই আমলের গভীরতার উপর নির্ভর করে, সুতরাং অন্তর থেকেই এই আমলের গভীরতার মাধ্যমে শয়তান থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। 

সবখানে আজ শয়তানের আধিপত্য বিস্তার করছে, ব্যাক্তি থেকে জাতি, তারপর দেশ থেকে দেশ, এমনকি যেকোনো সময় বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, এই ইবলীশ শয়তানের অনুসারী সহচরেরা, এক আদম থেকে সৃষ্ট এই সেই মানুষ, সারা জাহানে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধরত, শয়তান দুর থেকে তামাশা দেখে, আর মুচকি হাসে,

বান্দার প্রতি কতটা মেহেরবাণী জড়িয়ে আছে রাব্বুল আলামীনের, যে তিনি এই সত্য উপলব্ধি করেই আয়াত টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন ।

শেষ কথা: দয়াময় আল্লাহ্ আমাদের চির শত্রু শয়তানের সান্নিধ্যে আপ্যায়ীত না হয়ে, পবিত্র বাণীর মারফতে তার আশ্রয়ে থাকতে বলছেন নির্ভয়ে। 

এই আয়াত পাঠকারী থেকে দূরত্বে অবস্থানরত শয়তান, তার কোনোই ক্ষতি করতে পারে না, নিজের ক্রোধকে সংযত রেখে, পবিত্রতার সহিত "আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম পাঠকারীর বিকাশে ভূমিকা রাখা প্রত্যেকের নিজস্বার্থেই প্রয়োজন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

এই আয়াত জিকিরকারী কোনো খারাপ বা মিথ্যার বশবর্তী হবে না, পাপকর্মে লিপ্ত হতে পারবে না, সুখ অনুভব হবে অন্তরাত্মায়, নিজের থেকে পরিবার তারপর আত্বীয় স্বজন, দেশ ও জাতি, ক্রমান্বয়ে সারা জাহানে সুখ, শান্তি ও আনন্দ বিরাজমান হোত।

মহান আল্লাহ পাক তার বান্দাদের প্রতি সহায়, যে, "আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম" এই আয়াত বা বাণী দ্বারা শিক্ষা দিচ্ছেন প্রিয় বান্দাদের, সুন্দরের পথে দুনিয়াতে সুখ, আর মৃত্যুর পর জান্নাতের আশায়, মহান রবের আশ্রয়ে থাকতে বলছেন, শয়তান থেকে দূরে থাকতে বলছেন।

সমাজ গঠনে সহায়ক ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় হাতিয়ার এই আয়াত জিকিরকারী

অশেষ ফজিলত ও রহমতে ভরা অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন এই আয়াত টি আমল করা উচিৎ।

শেষ কথা হয়না শেষ, আল্ কুরআনের  বাক্য বা আয়াত নিয়ে আলোচনা করবো পরবর্তী সিরিজ এ , 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এই আয়াত এর বাস্তব অর্থের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ নিয়ে আসছি "ইনশাআল্লাহ" ।  

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু।

মুহাম্মদ খলিল

Discover unknown truth in "THE HOLY QURAN"


বিষয়বস্তু: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের অবাস্তব আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ বিশ্ব নেতারা,

বর্তমান বিশ্বের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে আমরা এক গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছি। প্রযুক্তির বিকাশ, স্থাপত্য নির্মাণের চমক ও অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য আমা...