"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" ফজিলত, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ,



"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"

পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

আমরা সকলেই জানি এই আয়াত টির বাংলা অর্থ, কিন্তু এই আয়াত এর মধ্যে রয়েছে যে কতটা অলৌকিক নেয়ামত তা কি জানি?

বিসমিল্লাহির : আল্লাহর নামে,

রাহমানির রাহিম : পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু।

আরবি হরফ গুলো সাধারণত একটির সাথে অন্যটির সংযুক্তি বা ধারাবাহিকতা বজায় থাকে, এজন্যে এই ভাষার আন্তরিকতা অন্তরে অনুভব হয়, মনমুগ্ধ হৃদয়ে প্রশান্তি পাওয়া যায় আল্লাহর রহমতে।

 বিসমিল্লাহ  : (আল্লাহর নামে শুরু করা), যে কোন কাজের শুরুতে, খাওয়ার শুরুতে, কোনো কিছু পান করার আগে, ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার সময়, ঘরে প্রবেশের আগে, যানবাহনে উঠার আগে, বাজারে প্রবেশের প্রাক্কালে, রান্না শুরু করার সময়, কোনো কিছু কাটাকাটি করার আগে, অজু করার আগে, ঘর থেকে মসজিদের উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার সময়, এমনকি পবিত্র বাণী আল্ কুরআন পাঠের পূর্বেও এই কালাম পড়া/বলা বা জিকির করা প্রত্যেক মমিন মুসলমানের অবশ্যই সুন্নতি দায়িত্ব।

এর কতটুকু আমরা মনুষ্য সমাজে মেনে চলছি ? বা এর প্রচলন বাস্তবায়িত করতে পেরেছি।

ভেবে দেখুন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জাগ্রত অবস্থায় যদি কোন মানুষ, যে কোন কাজের শুরুতে "বিসমিল্লাহ" বলে, তাহলে তার সেই কাজ সহজ হয়ে যায়, আল্লাহর রহমত ও কল্যাণ বর্ষিত হতে থাকে, কোনো শয়তানি শক্তি সে কাজের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে না, সর্বদা আল্লাহর নেক নজরে থাকেন, এমনকি সেই নেক আমল কারী আল্লাহর ফেরেশতা দ্বারা সুরক্ষিত থাকেন।

বিসমিল্লাহ এমন একটি শব্দ, বান্দা তার রবকে স্বরণ করার সাথে সাথে পরম করুণাময় আল্লাহ খুশি হয়ে যান, তৎক্ষণাৎ তার ডাকে সাড়া দেন।

আল্ কুরআনের ১১৪ টি সূরা -র  মধ্যে ১১৩ টি সূরা-তেই "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" দিয়ে শুরু করা হয়েছে, পবিত্র আল্ কুরআনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বয়ং আল্লাহ পাক এই পবিত্র বাণীর যথার্থ মূল্যায়ন করেছেন।বান্দাদের ও আমলের মাধ্যমে এই পবিত্র বাণীর মূল্যায়ন করতে বলেছেন।

আল্লাহ পাকের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আদম, যদি সর্বাবস্থায় মহান রবকে স্বরণ করে এই পবিত্র বাণীর আমল করতো, আজ সারা জাহানে শয়তানের শক্তির বিকাশ ঘটত না।

সত্যি কথা বলতে কি, সারা দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই কোনো কাজের শুরুতে "বিসমিল্লাহ" শব্দের উচ্চারণ করে না, আল্লাহর নামে শুরু করছি এই পবিত্র কথাটি বলে না, বা বলার অভ্যাস করেনা, কেউ কেউ জানলেও সঠিক সময়ে বলতে মনে থাকে না।
আর কম সংখ্যক মানুষের মধ্যে, ওলামায়ে মাসায়েখ, শায়েখ, খতিব, মাওলানা, ইমাম, হাফেজ ও মাদ্রাসা, মসজিদ, ঘরে, অধ্যায়নরত/আমলরত, আল্ কুরআনের অনুসারী, নিষ্পাপ শিশুদের নেক আমলের জন্যেই দুনিয়া আজও বিরাজমান, সালাম এইসব নেক আমল কারীদের।

পরম করুনাময় আল্লাহ্ যে বান্দার প্রতি কতটা মেহেরবাণ  তার প্রমাণ পাওয়া যায় পবিত্র আল্ কুরআনের সূরা আল্ রহমান এ, আল্লাহ্ পাক বলছেন : আর্ রহমান - দয়াময় আল্লাহ্।

সূরা ফাতিহা - আর্ রহমানীর রাহিম - পরম দয়াময় ও অসীম দয়ালু,

আল্লাহ্ পাক সর্বপ্রথম বেহেস্ত থেকে আদমকে করুণা/দয়া করলেন, আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গের কারণে, মহান আল্লাহ করুনা/দয়া না করলে আদম (আঃ) দুনিয়াতে আসত না, আমার ও আপনার জন্ম হোত না, তাইতো আল্লাহ্ মেহেরবাণ, আল্লাহ্ পাক দয়ালু।

 রাহমানির রাহিম : ( ২ টি শব্দ ) রাহমান ও রাহিম।

শুধু রাহমান শব্দের অর্থ বিশ্লেষণ করতে গেলে লেখা শেষ হবেনা।

দয়াময়  অসীম দয়ালু আল্লাহ্ পাক এর করুণা ও দয়ার জন্যেই আজ আমরা মুসলমান এর ঘরে জন্মেছি, অমুসলিম-এর ঘরেও তিনি (আল্লাহ) আমাকে জন্ম/সৃষ্টি করতে পারতেন, দয়াময় রহমানের করূণায়/কৃপায় মুসলমানরা ধন্য, শুকরিয়া, বলুন আলহামদুলিল্লাহ।

শয়তানের কুমন্ত্রণায় বান্দা যদি কঠিন গুনাহও করেন, ক্ষমা চাইলে তিনি মাফ করেন, তাইতো তিনি দয়াময়

প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) কে, সর্বশেষ উম্মতের রাসুল হিসেবে প্রেরণ করা ও আমাদের উপর আল্লাহর রহমত।

আল্ কুরআন কে পথ প্রদর্শক ও সর্বশেষ আসমানী কিতাব হিসেবে প্রেরণ, ইনসানের উপর আল্লাহর রহমত, করূণা এবং দয়া।

১৮০০০ মাখলুকাত এর মধ্যে ইনসানকে সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ রূপদান, আমাদের প্রতি রাব্বুল আলামীনের কৃপা বা দয়া। কত মহান আমাদের রব

মাটি থেকে বিভিন্ন ফসল ও ফলমূল, শাকসবজি থেকে বান্দার জন্য রিজিকের সৃষ্টি-ও আদমের উপর আল্লাহর রহমত, দয়া ।

গাছ থেকে অক্সিজেন পাওয়া ইনসানের উপর আল্লাহর রহমত, সূর্য, চন্দ্র, আলো, বাতাস, পানি, নদী, সাগর, মহাসাগর, মাছ সহ হালাল পশু - প্রাণীর ভক্ষণ, বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ, দয়া ও রহমত ।

আকাশ থেকে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে জমিনকে উর্বর রাখা বান্দার জন্য রাহমানির রাহিম এর বিশেষ দয়া।

ইবলিশ শয়তানের অনুসারী পাপীষ্ঠ বান্দা কেও পথে ফিরে আসার অপেক্ষায় রিজিক দান কারী - একমাত্র আল্লাহ্ এটাও বান্দার প্রতি আল্লাহর রহমত ও দয়া ।

নেক ইনসানকে দুনিয়াতে সন্মান ও আখেরাতে জান্নাত দান, দয়াময় আল্লাহর বান্দার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার, রাহমানির রাহিম যে অসীম দয়ালু

মোটকথা : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর ফজিলত, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ লিখে শেষ করা যাবেনা।

পরম করুণাময়ের এই ঐশী বাণী আয়াত টিকে সারা জাহানের প্রতিটি ইনসান যদি নিজের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করতেন, দুনিয়া হোত শান্তিময়।

শেষ কথা : আল্ কুরআনে বর্ণিত সত্য বাণীকে প্রতিষ্ঠা করে, সত্য জ্ঞানে জ্ঞানী হওয়া প্রতিটি ইনসানের পবিত্র ফরজ দ্বায়িত্ব, রাসুল ( সাঃ) এর উম্মত হিসেবে পবিত্র কর্তব্য।

নিজ কথা : দোষক্রটি মার্জনাহেতু সত্য বাণী প্রতিষ্ঠিত করার সুন্নাত আদায় করি।

বন্ধুরা, পরবর্তী আয়াত - সূরা ফাতিহা শুরু, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বীল আলামীন, যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে বা পাশে থাকেন - সত্য জ্ঞান আবিস্কার করার, তাহলে ধারাবাহিক প্রচার করব ইনশাআল্লাহ

ধন্যবাদ।
@ আলহামদুলিল্লাহি রাব্বীল আলামীন: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি সারা জাহানের রব

"আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু"

Discover unknown truth in "THE HOLY QURAN"

MD KHALIL



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

বিষয়বস্তু: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের অবাস্তব আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ বিশ্ব নেতারা,

বর্তমান বিশ্বের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে আমরা এক গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছি। প্রযুক্তির বিকাশ, স্থাপত্য নির্মাণের চমক ও অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য আমা...