Holy Quran Bangla লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Holy Quran Bangla লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

এক আদি পিতা ও এক মাতা থেকে সৃষ্টি সকল আদম, তাহলে কেন এত বিভেদ আর বৈষম্য ?

মানবজাতির সকল মানুষ আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) থেকে সৃষ্টি



 আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন—  

"হে মানবজাতি! আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পারো। নিশ্চয়ই আল্লাহর দৃষ্টিতে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত সে-ই, যে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাকওয়াবান। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন।         (সূরা আল-হুজুরাত: ১৩)  

এই আয়াতটি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে, যা মানবজাতির একতা, পারস্পরিক সম্মানবোধ এবং তাকওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে। এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে, যা কুরআনের আলোকে ব্যাখ্যা করা যায়।

১. মানবজাতির মূল উৎস: এক আদম (আ.) 

আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, মানবজাতির সকল মানুষ আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) থেকে সৃষ্টি। এর দ্বারা বোঝা যায় যে, বংশ, জাতি বা সম্প্রদায়ের পার্থক্যের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি অন্যের তুলনায় উত্তম নয়। বরং সকল মানুষ একই উৎস থেকে এসেছে, যা সাম্যের ভিত্তি স্থাপন করে।  
এই শিক্ষাটি সমাজে জাতিগত ও বর্ণগত বৈষম্য দূর করতে সাহায্য করে। ইসলামে জাতি, বর্ণ, গোত্র, ভাষা ইত্যাদির ভিত্তিতে কোনো বৈষম্য নেই। বরং আল্লাহ বলেন, সকল মানুষ একই পরিবারভুক্ত যার অর্থ, মানবজাতির মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতা থাকা উচিত।  

২. জাতি ও গোত্রের বৈচিত্র্যের উদ্দেশ্য  

আল্লাহ আমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছেন, কিন্তু এর উদ্দেশ্য বিভেদ সৃষ্টি করা নয়। বরং তিনি স্পষ্ট বলেছেন যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পারো।এখানে ‘চিনতে পারো’ (لِتَعَارَفُوا -) শব্দটি গুরুত্বপূর্ণ। এটি বোঝায় যে, পারস্পরিক পরিচিতি, সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মাধ্যমে সমাজে সৌহার্দ্য সৃষ্টি হবে। ইসলামে বহুজাতিক সমাজে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহাবস্থানের গুরুত্ব রয়েছে।  

হাদিসেও পাওয়া যায়

কোনো আরবের উপর অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, কোনো অনারবের উপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই; কোনো শ্বেতাঙ্গের উপর কৃষ্ণাঙ্গের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, কোনো কৃষ্ণাঙ্গের উপর শ্বেতাঙ্গের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি ও একমাত্র মানদণ্ড হলো তাকওয়া ।          (মুসনাদে আহমাদ: ২৩৪৮৯)  
    

৩. শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র মাপকাঠি: তাকওয়া 

আয়াতের শেষ অংশে আল্লাহ বলেন তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত সে-ই, যে সবচেয়ে বেশি তাকওয়াবান। তাকওয়া (اللَّهَ تَقْوَىٰ) অর্থ হলো আল্লাহভীতি ও ন্যায়পরায়ণতা।  
অর্থাৎ, মানুষের জাতি, বংশ, সামাজিক অবস্থান, সম্পদ বা ক্ষমতা নয়; বরং আল্লাহর কাছে প্রকৃত সম্মানিত সেই ব্যক্তি, যে তাকওয়ার মাধ্যমে ন্যায়পরায়ণ জীবনযাপন করে। এই আয়াত সামাজিক ন্যায়বিচার ও আত্মিক শুদ্ধতার মূলনীতি প্রতিষ্ঠা করে।  

৪. আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সর্ববিষয়ে অবগত 

আয়াতের শেষাংশে বলা হয়েছে নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। 

এর দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, কারো প্রকৃত মর্যাদা বা তাকওয়ার স্তর কেবল আল্লাহই জানেন। 
মানুষের উচিত বাহ্যিক পরিচয়ের ভিত্তিতে অন্যকে বিচার না করে বরং নিজেদের আমল ও চরিত্র উন্নত করা।  



এক আদি পিতা ও এক মাতা থেকে সৃষ্টি সকল আদম, কেন এত বিভেদ আর বৈষম্য ?

 লোভ আর লালসার বশবর্তী হয়ে আদম সন্তান আজ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের মায়াজালে আবর্তিত হচ্ছে, মানবাধিকার ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ছিন্ন করছে, আল্লাহর শান্তির পথ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে, ধর্মের নামে দুনিয়াকে কলুষিত করার প্রয়াসে লিপ্ত হচ্ছে, অথচ আমরা সবাই ভাই ভাই ??

ভাইয়ের সম্পদের লালসায় কি এই বিশৃঙ্খলা আজ পৃথিবীময় ?

সম্পদের লোভে তারা গাফেল হয়ে গিয়েছেন , তাদের আয়ূষ্কালে তারা এ সম্পদ ভোগ করতে পারে না, সন্তান রা ও ভোগ করতে পারে না, দুনিয়ার ইতিহাসে সর্বাধিক সম্পদের অধিকারী ছিলেন ফেরাউন, প্রাচীন আমলে পাহাড় কেটে বিশাল বিশাল গুদামঘর তৈরি করা হোত, সেই গুদামঘর গুলোর বিশালাকৃতির দরজার তালা এবং চাবি গুলোও ছিল অনেক বড় বড়, গুদামঘরের ভিতরে হিরা, সোনা, পান্না, মনি মুক্তা সহ বাদশার রাজ খাজানার সম্পদের পরিমাণ ছিল অশেষ


৬০ টি উটের পিঠে কাঠের বাক্সে বা কাঠের সিন্দুকে রাখা হতো এই গুদামঘর গুলোর হাজারো চাবি। তাহলে কি পরিমান সম্পদের মালিক ছিলেন ফেরাউন বাদশাহ ???
মানুষের সম্পদ গ্রাস করে ক্রমাগত অহংকারী বাদশাহ ফেরাউন নিজেকে GOD হিসেবে দাবি করেন, খোদা হতে চেয়েছিলেন, নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মহা ক্ষমতাবান মানুষ মনে করতেন, তার সৃষ্টিকর্তাকে সে ভুলে গেল, এবং পরিশেষে তার রাজত্ব আল্লাহ পাক ধংস করে দিলেন।

আজকের এই বর্তমান পৃথিবীতে সব দেশের সম্পদ একত্রিত করলেও,বাদশাহ ফেরাউনের হাজারো পাহাড়ি গুদামঘর এর একটির সমতুল্য ও হবে না।

বাদশাহ ফেরাউন একটি মাত্র মূহুর্তের মধ্যে নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল, সাগরের বুকে ফেরাউন বাদশাহ ডুবে মরল। তার রাজত্ব আল্লাহ পাক ধূলোয় মিশিয়ে দেন, অহংকারের পতন ঘটে, মুসা আঃ এর অনুসারীরা ছিল আজাব মুক্ত, তাদের কোনো ক্ষতি হয়নি।
তাহলে অতীত ইতিহাস থেকে আমরা কি শিক্ষা নেব না ??

আমাদের উচিত বাহ্যিক পরিচয়ের ভিত্তিতে অন্যকে বিচার না করে বরং নিজেদের আমল ও চরিত্র উন্নত করা। এক আদি পিতা ও এক মাতা  থেকে সৃষ্টি সকল আদম, কেন এত বিভেদ আর বৈষম্য ? 
লোভ আর লালসার বশবর্তী হয়ে আদম সন্তান আজ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের মায়াজালে আবর্তিত হচ্ছে, মানবাধিকার ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ছিন্ন করছে, আল্লাহর শান্তির পথ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে, ধর্মের নামে দুনিয়াকে কলুষিত করার প্রয়াসে লিপ্ত হচ্ছে, অথচ আমরা সবাই ভাই ভাই ?? ভাইয়ের সম্পদের লালসায় কি এই বিশৃঙ্খলা আজ পৃথিবীময় ?

উপসংহার

এই আয়াত আমাদের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়  

জাতিগত বিভেদ দূর করে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতি বজায় রাখা  
✅ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করা এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা  
✅ শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র মানদণ্ড হলো তাকওয়া, অর্থাৎ আল্লাহভীতি ও নৈতিকতা 
✅ মানুষের প্রকৃত মর্যাদা আল্লাহর কাছেই নির্ধারিত হয়, বাহ্যিক পরিচয়ে নয়**  

ইসলামের দৃষ্টিতে, এই আয়াত মানবসমাজের মধ্যে ঐক্য, সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। তাই, আমাদের উচিত এই শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা এবং সকল মানুষের প্রতি দয়া, সহানুভূতি ও ন্যায়পরায়ণ আচরণ করা।


আন্তরীক ধন্যবাদ, 
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু।

"সিরাতাল্লাজীনা আন'আমতা আলাইহিম"

 "সিরাতাল্লাজীনা আন'আমতা আলাইহিম" 

 


"
সিরাতাল্লাজীনা আন'আমতা আলাইহিম" 

 অর্থ :  "তাদের পথ, যাদের প্রতি (আল্লাহ) অনুগ্রহ করেছেন।"


এই আয়াতটি সূরা ফাতিহার অংশ, আল কুরআনের প্রারম্ভিক অধ্যায় এবং সমস্ত দোয়ার সারমর্ম হিসেবে পরিচিত।

ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ : 

এই আয়াতটি মহান আল্লাহর প্রতি আমাদের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে, যাতে আমরা সঠিক পথে পরিচালিত হই। এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে:

১. "সিরাত"তাল্লাজীনা বা পথের ধারণা :

"সিরাত" শব্দটি সরল, সঠিক এবং অবিচল পথকে নির্দেশ করে,
এটি এমন একটি পথ যা আল্লাহর সন্তুষ্টির দিকে নিয়ে যায়। এই পথ শুধুমাত্র ধর্মীয় নয়, বরং জীবনের সকল ক্ষেত্রে নৈতিক, আধ্যাত্মিক এবং সামাজিক দিক থেকে সঠিক দিশা দেখায়।

২. "আন'আমতা" বা অনুগ্রহপ্রাপ্তদের পরিচয় :

"আন'আমতা" বলতে বোঝানো হয়েছে সেই সকল ব্যক্তিদের, যাদের প্রতি আল্লাহ বিশেষ অনুগ্রহ করেছেন।

"আলাইহিম" 
কুরআনের বিভিন্ন স্থানে তাদের পরিচয় স্পষ্ট করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ:
নবীগণ (আলাহিস সালাম) : যারা আল্লাহর বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

সিদ্ধান্তপ্রাপ্ত সত্যবাদীরা : যারা ন্যায় ও সত্যের পথে অবিচল থেকেছেন।

শহীদগণ: যারা আল্লাহর পথে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

সৎকর্মশীল মুমিনগণ : যারা আল্লাহর আদেশ মেনে চলেন।

সরল পথের প্রয়োজনীয়তা:
এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর বান্দারা প্রার্থনা করেন যেন তারা বিভ্রান্তিমূলক পথ থেকে রক্ষা পায়,
এ আয়াতের মাধ্যমে সরল পথের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে, যা পৃথিবীতে সঠিক জীবনযাপন এবং আখিরাতে মুক্তির কারণ।



তাৎপর্য :

১. ইবাদতের মর্মবাণী :
এই আয়াত আমাদের শেখায়, ইবাদত মানে শুধু আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড নয়; বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই মূল লক্ষ্য।

২. সঠিক দিশা খোঁজার দোয়া :
মানুষকে সর্বদা সঠিক পথ খুঁজতে হবে এবং আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে। এই আয়াত সেই দোয়ার গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়।

৩. একতা ও ঐক্যের বার্তা :
এ আয়াত মুসলিমদের একসঙ্গে সঠিক পথে থাকার আহ্বান জানায়। এককভাবে সৎ হওয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই সমাজের সামগ্রিক সঠিক দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।


উপসংহার  :
"সিরাতাল্লাজীনা আন'আমতা আলাইহিম" আয়াতটি মুসলিম জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা। এটি আমাদের জানায় যে, সঠিক পথে চলা এবং আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্তদের পথ অনুসরণ করাই জীবনের আসল লক্ষ্য। আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের পথই মুক্তির পথ এবং আখিরাতে সফলতার চাবিকাঠি।

“সিরাতাল্লাজীনা আন'আমতা আলাইহিম” আয়াতটি প্রতিটি মুমিনের হৃদয়ে গভীরভাবে প্রোথিত একটি প্রার্থনা। এটি আমাদের আল্লাহর সেই পথের জন্য দোয়া করতে শেখায়, যা সরল, সঠিক এবং অনুগ্রহপ্রাপ্তদের পদাঙ্ক অনুসরণে পরিচালিত। এই আয়াত আমাদের জীবনে নৈতিকতা, সততা ও আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্যের গুরুত্ব তুলে ধরে।

এই আয়াতের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য কামনা করি এবং তাঁর প্রিয় বান্দাদের জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার চেষ্টা করি। নবীগণ, সত্যবাদী, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের পথ আমাদের জন্য এক আলোকিত দৃষ্টান্ত। এই পথে চলতে পারলে আমরা পার্থিব জীবনে শান্তি ও আখিরাতে মুক্তি লাভ করতে পারব।

অতএব, “সিরাতাল্লাজীনা আন'আমতা আলাইহিম” আমাদের জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তে সঠিক দিশা নির্ধারণের দোয়া। এটি শুধু মুখস্থ উচ্চারণ নয়, বরং অন্তরের গভীর অনুভূতি থেকে প্রার্থনার প্রকাশ।
আমরা যদি প্রতিদিনের নামাজে এই আয়াতের মর্মার্থ হৃদয়ে ধারণ করে আল্লাহর কাছে সরল পথের জন্য দোয়া করি, তাহলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য পাব এবং বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত থাকব।

 আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে তাঁর সরল পথে পরিচালিত করেন এবং বিভ্রান্তি ও গোমরাহি থেকে রক্ষা করেন। আমিন। 

আন্তরীক ধন্যবাদ, 
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু।
mdkhalil.rahman6690@gmail.com 


"ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম"

 "إهدنا الصراط المستقيم


"ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম" 

 

বাংলা অর্থআমাদেরকে সরল পথ দেখান।

 

আয়াতের ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ, তাৎপর্য ও ফজিলত ;

 "ইহদিনা" অর্থ:
এটি আল্লাহর নিকট সরাসরি একটি আবেদন। আমরা তাঁর পথনির্দেশনা চাই যা আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ। এটি আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আধ্যাত্মিক শুদ্ধি ও  নির্ভরতার প্রকাশ।
"সিরাত" অর্থ:
সিরাত মানে পথ বা রাস্তা। এটি এমন একটি পথ যা সোজা, নিখুঁত এবং অটুট।
"মুস্তাকিম" অর্থ:
মুস্তাকিম শব্দটি সঠিক, সোজা এবং সুষম পথ বোঝায়। এটি এমন এক পথ যা পরকালীন মুক্তির দিকে নিয়ে যায়।



তাওহিদের প্রকাশ:
আল্লাহকে একমাত্র পথপ্রদর্শক মানার মাধ্যমে এটি তাওহিদের মূলনীতি প্রতিষ্ঠা করে।

প্রতিদিনের আবেদন:
এই আয়াতটি ফাতিহার অংশ, যা প্রতিদিন সালাতে বারবার পড়া হয়, এটি মানুষের মনকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে আনে।

আধ্যাত্মিক শুদ্ধি:
এই দোয়া মানুষের আত্মাকে শুদ্ধ করে এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য বৃদ্ধি করে, এটি দুনিয়া এবং আখিরাতের সঠিক ভারসাম্য রাখতে শেখায়

সত্য ও ন্যায়ের পথ:
সরল পথ বলতে বোঝায়, সেই পথ যা সত্য, ন্যায় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নির্ধারিত।

আয়াতের তাৎপর্য ও ফজিলত; 

ইসলামের মূল আবেদন:
এই আয়াত আমাদের শেখায়, মানুষের জীবনের প্রধান লক্ষ্য আল্লাহর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করা, এটি পরকালীন জীবনের সফলতার প্রধান শর্ত।

বিশেষ ফজিলত;
১.   অন্ধকার থেকে আলোতে:
     এই আয়াতটি মানুষকে দুনিয়ার অন্ধকার থেকে সরল আলোকিত পথে নিয়ে     যায়।

২.   মনের প্রশান্তি:
      এই দোয়া পাঠ করলে হৃদয়ে প্রশান্তি আসে এবং সকল দুশ্চিন্তা দূর হয়।

৩.   তাওয়াক্কুলের শিক্ষা:
      আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখার শিক্ষা দেয়।

৪.   সকল বিষয়ে পথনির্দেশনা:
      জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ।

৫.  পরকালীন মুক্তি:
      এই দোয়া সরাসরি জান্নাতের পথে চলার নির্দেশনা দেয়।
আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এই দোয়া আমাদের শেখায় যে আল্লাহই একমাত্র সত্য গাইড। আমরা যখন তাঁকে সাহায্যের জন্য আহ্বান করি, তখন আমাদের হৃদয়, মন ও আত্মা আল্লাহর প্রতি সমর্পিত হয়। এই প্রার্থনার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর আলোকিত পথে চলতে অনুপ্রাণিত হই, যা দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বোচ্চ সফলতা এনে দেয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর সরল পথে পরিচালিত করুন। 



উপসংহার
"ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম" শুধুমাত্র একটি দোয়া নয়; এটি মানুষের জীবনের একটি পূর্ণাঙ্গ দর্শন। এটি মানুষকে জীবনের সব ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে এবং আখিরাতের সফলতার পথে চালিত করে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সরল পথে পরিচালিত করুন।

"ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম" আয়াতটি এক অসীম দোয়া, যা মানুষের অন্তরের গভীরতম প্রার্থনা প্রকাশ করে। এই আয়াতের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে সেই সরল পথের দিশা চাই, যা তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ এবং চিরন্তন মুক্তির পথ।

আধ্যাত্মিক অর্থে, সরল পথ মানে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহর নির্দেশনা অনুসরণ করা। এটি শুধু বাহ্যিক কাজ নয়, অন্তরের শুদ্ধতা ও সঠিক নিয়তের দিকেও ইঙ্গিত করে। 

এই দোয়া আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আমরা নিজেরা কখনোই পথের দিশা নির্ধারণ করতে সক্ষম নই। আল্লাহই একমাত্র পথপ্রদর্শক, যিনি আমাদের অন্তরকে আলোর দিকে পরিচালিত করেন।

এ আয়াত আমাদের তাওহিদের মহিমা শেখায়—আল্লাহ ছাড়া কেউ সত্যিকারের সাহায্যকারী বা দিকনির্দেশক হতে পারে না। এর মধ্য দিয়ে আমরা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ সমর্পণ ও আনুগত্য প্রকাশ করি। এই দোয়া জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের মনকে আল্লাহমুখী করে এবং তাঁর সাথে গভীর আত্মিক সংযোগ স্থাপন করে।

আল্লাহর এই ওহীর বাণী আমাদের শিক্ষা দেয় যে, দুনিয়ার অস্থিরতার মাঝে স্থিতিশীলতা, অন্ধকারে আলো এবং অজানার মাঝে সঠিক পথ একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছাতেই পাওয়া সম্ভব। আমিন।


আন্তরীক ধন্যবাদ, 
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু।

mdkhalil.rahman6690@gmail.com 


ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন


 ইয়্যা-কা নাবুদু  ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন = আমরা তোমারই ইবাদত করি ও তোমারই সাহায্য প্রার্থী।

আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

সূরা ফাতিহার ৪নং আয়াত = ইয়্যা-কা নাবুদু  ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন।

অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন এই পবিত্র আয়াত টির মধ্যে রয়েছে আন্তরীক ভাব, রূহানী প্রশান্তি পাওয়া যায় এই বাণী গুলো পাঠ করলে।

একমাত্র প্রশংসার অধিকারী সারা জাহানের রব, দয়াময় ও  অসীম দয়ালু, বিচার দিবসের মালিক যিনি, আমরা তারই ইবাদত করি এবং তারই সাহায্য কামনা করছি, অনেক জ্ঞানগর্ভ কথা/ বাণী এই আয়াতগুলো। 
নামাজের মধ্যে বা যখনি, এই আয়াতটি হৃদয়ের গভীর থেকে অর্থ উপলব্ধি করে তিলাওয়াত করলে প্রশান্তি পাওয়া যায়, দুচোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না, এটাই সত্য, আলহামদুলিল্লাহ।

হৃদয়ে জমানো শতব্যাথা, বেদনা,দুঃখ, কষ্ট, আশা, আকাঙ্ক্ষা, পাপ, অন্যায়, ক্ষোভ, রিজিক, অভাব, অসম্মান, চাওয়া পাওয়া সহ সমস্ত কিছুর মালিক যিনি, আমরা তারই ইবাদত করি এবং তারই সাহায্য চাচ্ছি, হৃদয়ের গভীর থেকে ধ্যানমগ্ন বান্দা যখনি এই আয়াত  তিলাওয়াত করে, রাব্বুল আলামীন অত্যন্ত খুশী হয়ে যান।

দয়াময় ও পরম দয়ালু, সারা জাহানের প্রশংসিত রব এবং বিচার দিনের মালিক তুমি আল্লাহ, আমরা তোমারই ইবাদত করি - তোমারই সাহায্য চাই, বান্দার আধ্যাত্মিক রুহুথেকে ক্রন্দনরত হৃদয়ের বাণী পাঠ করার সাথে সাথেই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা পূরন করে দেন, হাসবিয়াল্লাহ, আল্লাহ-ই যথেষ্ট।



নিজ কথা : আমি দেশের সেরা মসজিদগুলোতে জুম্মার নামাজে দেখেছি খতীব, মাওলানা, শায়েখ, ইমাম সাহেবদের এই আয়াতটি পাঠ করেন ২ থেকে ৩ বার, আয়াতের গুরুত্ব অনুধাবন করে তারা দুচোখের পানি ছেড়ে দিয়েছেন, অঝরে কাঁদতে থাকেন।
পরবর্তীতে আমি নিজেও এর সত্যতা অনুভব করি, আলহামদুলিল্লাহ,অনেক,অনেক রহমতে ভরা এই পবিত্র আয়াতটি।

দুনিয়াতে মানুষের জীবনে বিভিন্ন ও বিচিত্র রকম ঘটনা ঘটে,কেউ সাংসারিক জীবনে দুঃখী, কেউবা ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় দুঃখী তো কেউ অসুস্থ হয়ে দুঃখী,কেউ অভাবে দুঃখী কেউবা প্রিয়জনকে না পেয়ে দুঃখী, কেউবা প্রিয়জনের কাছ থেকে কষ্ট পেয়ে দুঃখী,কেউবা ব্যবসার লোকসানে দুঃখী তো কেউ একটা ভাল চাকরির আশায় দুঃখী, আবার কেউ জানতে/অজান্তে গুনাহ মাফের আকাঙ্ক্ষায় দুঃখী, কেউবা পিতা মাতার স্বরণ করে দুঃখী।

শত দুঃখ কষ্ট নিয়ে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে যদি আবেগ আপ্লুত হয়ে, অন্তর থেকে এই আয়াতটি পাঠ করা যায় - ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন, আমরা তোমারই ইবাদত করি ও তোমারই সাহায্য প্রার্থী, রাব্বুল আলামীন সাথে সাথে সে আশা পূরণ করেন।

উম্মুল কুরআন সুরা ফাতিহায় বর্ণিত এই আয়াত গুলো পৃথিবী বিখ্যাত অনেকেই এর ফজিলত ও বরকত ব্যাখ্যা করেছেন,  হাদীস বিশারদদের মধ্যে বেশির ভাগই এই আয়াতের গুরুত্ব অনুধাবন করে, সূরা ফাতিহায় বর্ণিত প্রথম ৪ টি আয়াতকে ইছম আজম বলে আখ্যায়িত করেছেন। 



যেহেতু,  এই ৪টি আয়াতের মধ্যে রয়েছে আল্লাহ পাক এর প্রশংসা, সৃষ্টি জগতের বিশালতা, রাজত্ব, দয়াময় দয়ালু, সত্য ও ন্যায় বিচারের কঠোরতা, আধিপত্য, ইবাদতের যোগ্য, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণে সাহায্য প্রার্থনা, আন্তরিক চাওয়া পাওয়া সংযোজিত হয়েছে, পবিত্র আল্ কুরআনের সর্বপ্রথম এই বাণী গুলোই ইছম আজম।

আল্লাহ পাক এর প্রশংসা ও গুণগান সম্বলিত অর্থবোধক বাণীর মারফতে, অলৌকিক সাহায্য প্রাপ্তির আয়াত গুলোকেই ইছম আজম বলা হয়, ইছম আজম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ, পরবর্তী কোন সময় ।

মূলকথা = পবিত্র দেহ-মনে দয়াময় আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন এর কাছে নেক নিয়তে যা চাইবে তাই পাইবে, কাউকে তিনি আল্লাহ দুনিয়াতেই দিয়ে দেন, আবার কাউকে আখেরাতে দেওয়ার জন্য জমা রেখে দেন, তবে অবশ্যই দেন। আলহামদুলিল্লাহ।

বান্দা যখন তার মালিককে ডাকে - আর রাহমান, আর রাহিম, কতযে রহমতে ও নেয়ামতে ভরা কলিজা ঠান্ডা করা বাণী স্বয়ং আল্লাহ পাক আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন, এই আয়াত যদি অর্থসহ অন্তরে অনুভব করা যায় তাহলে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় আধ্যাত্মিক শান্তি কি ও কত প্রকার।

 Discover unknown truth in THE HOLY QURAN এ , আমি সহজ সরল বাংলা অর্থসহ আল কুরআনের বাণী গুলো অন্তরের গভীর থেকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি, ভুলক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

বাস্তব জীবনে দেখুন = নামাজ আদায় করছি, সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করছি, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করছি ঠিকই, কিন্তু অন্তরাত্মা থেকে অর্থ উপলব্ধি করতে পারছি না, যখনি তিলাওয়াত করছি মুখস্থ ছড়া বা কবিতার মতো পাঠ করছি।

সূরায় বর্ণিত আয়াত গুলো অর্থসহ হৃদয়ের গভীরে অনুভব করতে পারছি না শতকরা ৯৫ জনই, এটাই বাস্তব সত্য, চর্চার অভাবেই এমনটি হয়ে যাচ্ছে। 
আজ যদি আরবী তিলাওয়াত বা উচ্চারণের পাশাপাশি, বাংলা অর্থের চর্চা বাধ্যতামূলক থাকত, তাহলে বাঙালির নামাজ হোত মক্কা এবং মদীনা বাসীদের মত, মসজিদে সূরা ফাতিহা শুরু হওয়ার সাথে সাথে কান্নার আওয়াজ শোনা যেত, মুসুল্লিদের দুচোখ ভরে যেত পানিতে

প্রতিটি মানুষ আধ্যাত্মিক হয়ে আল্লাহর সাথে কথা বলত, আর চাইতো , ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন = আমরা তোমারই ইবাদত করি আর শুধুমাত্র তোমারই কাছে সাহায্য চাই, এ মালিক দয়াময় আমার মনের আশা পূরণ করে দেন, হাসবিয়াল্লাহ, দয়াময় আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন সর্বদা প্রস্তুত থাকেন তার বান্দাদের সাহায্য করার জন্য, দান করেন তার অফুরন্ত ভান্ডার থেকে। 
কারণ,
 


কারণ = রাব্বুল আলামীন বলেন,  
তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব ।

 সূরা গাফির, আয়াত - ৬০ ।


পিতার কাছে যদি কোন সন্তান কিছু আবদার করে কিছু চায়, আন্তরিকভাবে যে কোন প্রকারে হোক বাবা তার সন্তানের চাহিদা পূরণ করে দেন, যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ জীব ইনসানের রূপে, সবচেয়ে সুন্দর আকৃতি দিয়েছেন, সারা জাহান সাজিয়েছেন মানুষের জন্য, শুধুমাত্র আমরাই না, সারা জাহানের সমস্ত জীবের রিজিকদাতা, দয়াময় ও পরম দয়ালু, মানুষের চেয়েও সত্তর হাজার গুন বেশি আল্লাহর রহমতের মায়া, মমতা ও বান্দার প্রতি আল্লাহর এহসান, ভালবাসা, ফেরেশতা দের কোনো কিছু চাওয়া পাওয়ার সুযোগ নেই যেখানে মানুষের আছে, আল্লাহ পাক ফেরেশতা দের থেকেও বেশি কাছাকাছি হয়েছেন ইনসানের, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মেরাজ এর মাধ্যমে, তিনিই দয়াময় পরম করুণাময় আল্লাহ, তাইতো রাব্বুল আলামীন বান্দার ডাকে সাড়া দেন ঠিকই আমরা ধ্যানমগ্ন হয়ে তার সাথে কথা বলতে পারি না।
সুতরাং ভুল আমাদেরই, আমরাই আন্তরীকভাবে চাইতে জানি না, রহমান দয়াময় আল্লাহ পাক অবশ্যই দিবেন।

আমরাই তো আল্লাহর সাহায্য চাইতে পারছি না, তিনি কিভাবে দিবেন, কি দিবেন?

মুখে মুখে মুখস্থ বলছি ঠিকই ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন, কিন্তু ধ্যান চলে যাচ্ছে অন্য জায়গায়, চিন্তা করছি অন্য কিছু, মুখে বলছি এককথা অথচ চিন্তা করছি অন্য কথা, মুখে পড়া বাণীর সাথে নফসের চিন্তাশক্তির মিল থাকতে হবে, তবেই রূহানী প্রশান্তি পাওয়া যাবে।

সুতরাং, নিজ কন্ঠে উচ্চারিত আল্ কুরআনের আয়াতের শাব্দিক অর্থ বুঝে, পবিত্র রূহ থেকে ধ্যানমগ্ন হয়ে আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ কারী বান্দাই সাহায্য পাওয়ার যোগ্য, রাব্বুল আলামীন তাকেই তৎক্ষণাৎ দান করেন।



তাইতো এই আয়াতটি যখনি তিলাওয়াত করা হয় - ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন = এ মালিক আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি, অন্য কারো নয়, তোমার কাছেই সাহায্য চাই, অন্য কারো কাছে নয়, তুমি আমাদের সাহায্য কর রাব্বুল আলামীন, তিনি অবশ্যই সাহায্য করবেন। কত মধুরতম বাণী এটি ? হৃদয়ের গভীরে প্রশান্তিতে ভরে যাবে।

শেষকথা:
আমরা সারা জাহানের প্রশংসিত রব, দয়াময় ও পরম দয়ালু, বিচার দিবসের মালিক এক আল্লাহর ইবাদত করি এবং তারই সাহায্য কামনা করি, রাব্বুল আলামীন আমাদের প্রার্থনা কবুল করুন। আমীন।

আসুন, আমরা সেই সত্বার ইবাদত করি অন্তরের অন্তস্থল থেকে, যিনি সর্বোচ্চ প্রশংসার অধিকারী, দয়াময় ও পরম দয়ালু, বিচার দিনের একমাত্র মালিক, সারা জাহানের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করি, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যানে পবিত্র রূহ-কে বেহেশতের পথে পরিচালিত করি, আমীন ।

পরবর্তী আয়াত থেকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ নিয়ে আসছি, ইনশাআল্লাহ, 
ইহ্দিনাস সীরাতাল মুস্তাকিম = আমাদের সোজা-সরল পথে পরিচালিত করুন।

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু।

মুহাম্মদ খলিল ।



WASSALATU - WAJJAKATA video

 WASSALATU - WAJJAKATA







ইসলামিক, ইসলামিক ভিডিও, ইসলামিক ভাইরাল ভিডিও, আউযুবিল্লাহি পাঠের ফজিলত, আল্ কুরআনের আলো, আল্ কুরআনের বাণী,#Quran #Islam #The truth on the way 

Discover unknown truth in "THE HOLY QURAN" is the best place to get true knowledge from THE HOLY QURAN in Bangla.
Discover unknown facts & feel fine from heart & soul,
LOVE each other as a brother & sister, may 'ALLAH' bless u as a Muslim.

If u sacrifice to anyone, "ALLAH" will sacrifice to u .

আসুন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ এই মহাপবিত্র আল্ কুরআনে বর্ণিত আয়াত থেকে ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাস্তব সত্য অনুধাবন করি, জান্নাতের পথে চলি, সারা জাহানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখি, 
প্রতিটি মানুষকে সত্যর বাণী শুনতে/ পড়তে সহযোগিতা করুন, ঈমানকে মজবুত করুন, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করুন।


ASSALAMUALAICUM - WA - RAHMATULLAHI WA BARAKATU.


"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" ফজিলত, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ,



"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"

পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

আমরা সকলেই জানি এই আয়াত টির বাংলা অর্থ, কিন্তু এই আয়াত এর মধ্যে রয়েছে যে কতটা অলৌকিক নেয়ামত তা কি জানি?

বিসমিল্লাহির : আল্লাহর নামে,

রাহমানির রাহিম : পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু।

আরবি হরফ গুলো সাধারণত একটির সাথে অন্যটির সংযুক্তি বা ধারাবাহিকতা বজায় থাকে, এজন্যে এই ভাষার আন্তরিকতা অন্তরে অনুভব হয়, মনমুগ্ধ হৃদয়ে প্রশান্তি পাওয়া যায় আল্লাহর রহমতে।

 বিসমিল্লাহ  : (আল্লাহর নামে শুরু করা), যে কোন কাজের শুরুতে, খাওয়ার শুরুতে, কোনো কিছু পান করার আগে, ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার সময়, ঘরে প্রবেশের আগে, যানবাহনে উঠার আগে, বাজারে প্রবেশের প্রাক্কালে, রান্না শুরু করার সময়, কোনো কিছু কাটাকাটি করার আগে, অজু করার আগে, ঘর থেকে মসজিদের উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার সময়, এমনকি পবিত্র বাণী আল্ কুরআন পাঠের পূর্বেও এই কালাম পড়া/বলা বা জিকির করা প্রত্যেক মমিন মুসলমানের অবশ্যই সুন্নতি দায়িত্ব।

এর কতটুকু আমরা মনুষ্য সমাজে মেনে চলছি ? বা এর প্রচলন বাস্তবায়িত করতে পেরেছি।

ভেবে দেখুন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জাগ্রত অবস্থায় যদি কোন মানুষ, যে কোন কাজের শুরুতে "বিসমিল্লাহ" বলে, তাহলে তার সেই কাজ সহজ হয়ে যায়, আল্লাহর রহমত ও কল্যাণ বর্ষিত হতে থাকে, কোনো শয়তানি শক্তি সে কাজের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে না, সর্বদা আল্লাহর নেক নজরে থাকেন, এমনকি সেই নেক আমল কারী আল্লাহর ফেরেশতা দ্বারা সুরক্ষিত থাকেন।

বিসমিল্লাহ এমন একটি শব্দ, বান্দা তার রবকে স্বরণ করার সাথে সাথে পরম করুণাময় আল্লাহ খুশি হয়ে যান, তৎক্ষণাৎ তার ডাকে সাড়া দেন।

আল্ কুরআনের ১১৪ টি সূরা -র  মধ্যে ১১৩ টি সূরা-তেই "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" দিয়ে শুরু করা হয়েছে, পবিত্র আল্ কুরআনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বয়ং আল্লাহ পাক এই পবিত্র বাণীর যথার্থ মূল্যায়ন করেছেন।বান্দাদের ও আমলের মাধ্যমে এই পবিত্র বাণীর মূল্যায়ন করতে বলেছেন।

আল্লাহ পাকের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আদম, যদি সর্বাবস্থায় মহান রবকে স্বরণ করে এই পবিত্র বাণীর আমল করতো, আজ সারা জাহানে শয়তানের শক্তির বিকাশ ঘটত না।

সত্যি কথা বলতে কি, সারা দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই কোনো কাজের শুরুতে "বিসমিল্লাহ" শব্দের উচ্চারণ করে না, আল্লাহর নামে শুরু করছি এই পবিত্র কথাটি বলে না, বা বলার অভ্যাস করেনা, কেউ কেউ জানলেও সঠিক সময়ে বলতে মনে থাকে না।
আর কম সংখ্যক মানুষের মধ্যে, ওলামায়ে মাসায়েখ, শায়েখ, খতিব, মাওলানা, ইমাম, হাফেজ ও মাদ্রাসা, মসজিদ, ঘরে, অধ্যায়নরত/আমলরত, আল্ কুরআনের অনুসারী, নিষ্পাপ শিশুদের নেক আমলের জন্যেই দুনিয়া আজও বিরাজমান, সালাম এইসব নেক আমল কারীদের।

পরম করুনাময় আল্লাহ্ যে বান্দার প্রতি কতটা মেহেরবাণ  তার প্রমাণ পাওয়া যায় পবিত্র আল্ কুরআনের সূরা আল্ রহমান এ, আল্লাহ্ পাক বলছেন : আর্ রহমান - দয়াময় আল্লাহ্।

সূরা ফাতিহা - আর্ রহমানীর রাহিম - পরম দয়াময় ও অসীম দয়ালু,

আল্লাহ্ পাক সর্বপ্রথম বেহেস্ত থেকে আদমকে করুণা/দয়া করলেন, আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গের কারণে, মহান আল্লাহ করুনা/দয়া না করলে আদম (আঃ) দুনিয়াতে আসত না, আমার ও আপনার জন্ম হোত না, তাইতো আল্লাহ্ মেহেরবাণ, আল্লাহ্ পাক দয়ালু।

 রাহমানির রাহিম : ( ২ টি শব্দ ) রাহমান ও রাহিম।

শুধু রাহমান শব্দের অর্থ বিশ্লেষণ করতে গেলে লেখা শেষ হবেনা।

দয়াময়  অসীম দয়ালু আল্লাহ্ পাক এর করুণা ও দয়ার জন্যেই আজ আমরা মুসলমান এর ঘরে জন্মেছি, অমুসলিম-এর ঘরেও তিনি (আল্লাহ) আমাকে জন্ম/সৃষ্টি করতে পারতেন, দয়াময় রহমানের করূণায়/কৃপায় মুসলমানরা ধন্য, শুকরিয়া, বলুন আলহামদুলিল্লাহ।

শয়তানের কুমন্ত্রণায় বান্দা যদি কঠিন গুনাহও করেন, ক্ষমা চাইলে তিনি মাফ করেন, তাইতো তিনি দয়াময়

প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) কে, সর্বশেষ উম্মতের রাসুল হিসেবে প্রেরণ করা ও আমাদের উপর আল্লাহর রহমত।

আল্ কুরআন কে পথ প্রদর্শক ও সর্বশেষ আসমানী কিতাব হিসেবে প্রেরণ, ইনসানের উপর আল্লাহর রহমত, করূণা এবং দয়া।

১৮০০০ মাখলুকাত এর মধ্যে ইনসানকে সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ রূপদান, আমাদের প্রতি রাব্বুল আলামীনের কৃপা বা দয়া। কত মহান আমাদের রব

মাটি থেকে বিভিন্ন ফসল ও ফলমূল, শাকসবজি থেকে বান্দার জন্য রিজিকের সৃষ্টি-ও আদমের উপর আল্লাহর রহমত, দয়া ।

গাছ থেকে অক্সিজেন পাওয়া ইনসানের উপর আল্লাহর রহমত, সূর্য, চন্দ্র, আলো, বাতাস, পানি, নদী, সাগর, মহাসাগর, মাছ সহ হালাল পশু - প্রাণীর ভক্ষণ, বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ, দয়া ও রহমত ।

আকাশ থেকে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে জমিনকে উর্বর রাখা বান্দার জন্য রাহমানির রাহিম এর বিশেষ দয়া।

ইবলিশ শয়তানের অনুসারী পাপীষ্ঠ বান্দা কেও পথে ফিরে আসার অপেক্ষায় রিজিক দান কারী - একমাত্র আল্লাহ্ এটাও বান্দার প্রতি আল্লাহর রহমত ও দয়া ।

নেক ইনসানকে দুনিয়াতে সন্মান ও আখেরাতে জান্নাত দান, দয়াময় আল্লাহর বান্দার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার, রাহমানির রাহিম যে অসীম দয়ালু

মোটকথা : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর ফজিলত, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ লিখে শেষ করা যাবেনা।

পরম করুণাময়ের এই ঐশী বাণী আয়াত টিকে সারা জাহানের প্রতিটি ইনসান যদি নিজের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করতেন, দুনিয়া হোত শান্তিময়।

শেষ কথা : আল্ কুরআনে বর্ণিত সত্য বাণীকে প্রতিষ্ঠা করে, সত্য জ্ঞানে জ্ঞানী হওয়া প্রতিটি ইনসানের পবিত্র ফরজ দ্বায়িত্ব, রাসুল ( সাঃ) এর উম্মত হিসেবে পবিত্র কর্তব্য।

নিজ কথা : দোষক্রটি মার্জনাহেতু সত্য বাণী প্রতিষ্ঠিত করার সুন্নাত আদায় করি।

বন্ধুরা, পরবর্তী আয়াত - সূরা ফাতিহা শুরু, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বীল আলামীন, যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে বা পাশে থাকেন - সত্য জ্ঞান আবিস্কার করার, তাহলে ধারাবাহিক প্রচার করব ইনশাআল্লাহ

ধন্যবাদ।
@ আলহামদুলিল্লাহি রাব্বীল আলামীন: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি সারা জাহানের রব

"আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু"

Discover unknown truth in "THE HOLY QURAN"

MD KHALIL



আঊযুবিল্লাহি মিনাশ্শাইত্বোয়ানির রাজিম।

 




আঊযুবিল্লাহি মিনাশ্শাইত্বোয়ানির রাজিম। 


যে আয়াতটি মহাগ্রন্থ আল্ কুরআনে বর্ণিত হয়েছে সেই আয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ, আশ্চর্যের বিষয় হলো, এতবড় অশেষ রহমতে ভরা অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন, এই  বাক্যের অর্থ, ফজিলত, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ খুব কমই দেখা গেছে, 

আসুন দেখি পড়ে বুঝার চেষ্টা করি যে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ পাক আমাদের কি বোঝাতে চেয়েছেন;

 রাব্বী যিদনী ইলমা : হে রব (আল্লাহ) ইলম দান করুন,এই ৩ টি শব্দের অর্থের ও ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ অপরিসীম, যা আলোচনার জন্য বিশেষ প্রয়োজন।

পর্যায়ক্রমে আল্ কুরআনে বর্ণিত আয়াত থেকে ব্যাখ্যা, অর্থসহ বাস্তবজীবনে সত্য প্রতিফলিত বিচার বিশ্লেষণ নিয়ে আলোচনা করব, ইনশাল্লাহ অলৌকিক প্রশান্তিতে ভরে যাবে অন্তর, চলুন জান্নাতের পথে, অন্তরে অনুভব করুন সত্য যে কত সুন্দর, মিথ্যা যে কতটা ঘৃনীত।

১) আউযুবিল্লাহি : আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই,

২) মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম:শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে

তাহলে পুরো বাক্যটি কি হল - শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।

একবারও কি ভেবেছেন এ আরবি শব্দ গূলোতে কি বলছি, 

 আউযুবিল্লাহি: সারা জাহানের সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন ও মৃত্যু দানকারী, আসমান ও জমিনের সৃষ্টিকারী, শয়তান ও ইনসানের রুহুদানকারী,  মহান দয়ালু আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, এক আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, যিনি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালl

মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম :

সর্বপ্রথম যখন আল্লাহ পাক আদম সৃষ্টি করলেন, তখন থেকেই শয়তান আদমের প্রকাশ্য/ অপ্রকাশ্য শত্রু, আল্লাহ পাক এর কাছে কসম খাওয়া আদমের ১ নং দুশমন, এ কথা আমরা সকলেই জানি, কিন্তু গভীরে ঢুকে অনুভব করতে পারিনা।

শয়তান দুনিয়াতে আদমের সাথে শয়তানি করবেই, আর পরম দয়ালু আল্লাহ পাক তার  বান্দাদের প্রতি সহায় হবেন, আশ্রয় দিবেন, এমনকি আল্লাহ পাক এর বাহিনী (ফেরেশতা) দিয়ে পাহারা দেয়া হবে সেই বান্দাদের। 

কত বড় নেয়ামত এ অলৌকিক ৩ টি শব্দচয়ন-এ, এ তো গেল ইবলীশ শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাওয়ার গাইবী উপায়, বাস্তব দুনিয়াতে Indirectly শয়তান তার বিনাশ কার্যক্রম পরিচালনা করছে, আদমের মস্তিষ্কে ঢুকে পড়ছে,  সমস্ত কিছু যা খারাপ আছে ইনসানের জন্য, সব তার কাছে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করছে, আদমকে লোভনীয়, মিথ্যুক, অহংকারী করে তুলছে, সদা অপবিত্র থাকার ফলে আদম, শয়তানের কুমন্ত্রণায় তারচেয়ে-ও বড় শয়তান হয়ে যাচ্ছে, সে আদম সন্তান হয়ে যাচ্ছে নৃশংসতার নরপশু, পশুরাও এতটা পাশবিক নয়, যতটা মানুষ, ছোট থেকে বড় সব ধরনের গুনাহের কাজ শয়তানের কুমন্ত্রণায় নির্দ্বিধায়  করে যাচ্ছে, ক্রমাগত শয়তান তার দুনিয়া, আখেরাত নষ্ট করছে।

মানুষ মানুষের জন্য শান্তি বিনষ্ট কারী অসামাজিক জীব হয়ে উঠছে

ঘর থেকে দেখুন - অভাবের শয়তানি, স্বামী - স্ত্রীর মাঝে শয়তানি, ভাই - বোনের মধ্যে শয়তানি, বাজারে শয়তানি, অফিসে বাড়তি ইনকামের লোভে পড়ে শয়তানি, চা দোকানে গিবত করা শয়তানি, আরোও হাজারও ব্যাখ্যা আছে ইনসানের অপবিত্র থাকার ফলে শয়তানের কুমন্ত্রণার কার্যকলাপ সমন্ধে। খেলার মাঠে জয়ের শয়তানি, রাজনীতিতে ধর্ শয়তানি, পথে, ফুটপাতে ক্রয়/বিক্রয়ে শয়তানি

এমনকি এই ইবলীশ শয়তান মানুষের নামাজ আদায় করার সময়-ও অপ্রকাশ্য অন্তরে দিকভ্রষ্ট করায়, নামাজে বাধা দেয়, অন্তরে নানা ধরনের কুচিন্তা আনয়ন করে, বান্দাদের তার নেক আমল থেকে বিরত রাখার প্ররোচনা দেয়।

একবারও ভেবেছেন কি শয়তান আমাদের কি ভাবে চারিদিক থেকে নিরব ক্ষতিসাধন করছে?

এমন কোন জায়গা নেই যেখানে ইবলিশ প্রবেশ করতে পারে না, এই ক্ষমতা টুকুন ও ইবলিশ আল্লাহর কাছে চেয়ে নিয়েছিল, তবে যে রুহ দয়াময় আল্লাহর জিকির/ গুনগানে মগ্ন থাকবে সে রুহের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, এ কথা ও আমরা সকলেই জানি।

কিন্তু ভেবেছেন কি কয়টা রুহ পাক -পবিত্র থেকে আল্লাহর জিকির/গুনগান করছি ?

খুব কমই পাবেন, কিন্তু তাদের  নেক আমল এত ভারী যে তাদের জন্যই পুরো জাতি আল্লাহর রহমতের ছায়ায় থাকেন, সে জাতিকে আল্লাহ গজব দেন না।

আল্ কুরআনে  বর্ণিত : শয়তানের প্ররোচনায় মত্ত এমন অনেক জাতিকে আল্লাহ ধ্বংস করে দিয়েছেন, পুরো শহর উল্টে দিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোতে এরকম অনেক বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়।

তাহলে দেখুন, ইবলিশ মানুষের মধ্যে শয়তানি কুমন্ত্রণার কার্যকলাপ চালিয়ে যায়, ব্যাক্তি থেকে ঘর, পাড়া প্রতিবেশী, গ্রাম, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা, জেলা, শহর, বন্দর, মহানগর, ক্রমশই দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।

আমার/আপনার মহান রব, দয়াময় আল্লাহ যে গায়েবের - ও মালিক, আদমের সৃষ্টিলগ্ন থেকে কেয়ামত, তারপরে কবর, আখেরাত, বিচার দিবস, বেহেস্ত, দোজখ, শয়তান কে বলি দেওয়া, সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে শুধুমাত্র একক আল্লাহ্ থাকবেন।

গায়েবের রহস্য তিনি ছাড়া কে ভাল জানেন ?

সৃষ্টির শুরু থেকেই শয়তান আদমের প্রকাশ্য/অপ্রকাশ্য চির শত্রু জেনেই, মহান রব সর্বপ্রথম শয়তান থেকে রক্ষা পেতে এই বাণী আদমকে পড়তে বললেন, পরবর্তী সময়ে নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মাধ্যমে নাজিল হয়ে,পবিত্র আল্ কুরআনে প্রতিষ্ঠিত হয়।

ভেবেছেন কি ? এই ইবলীশ শয়তান পবিত্র আল্ কুরআন পাঠের সময় - ও মনুষ্য অন্তরে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে! তাইতো সবজান্তা মহান আল্লাহ এই পবিত্র বাণী বাক্যটিকে পবিত্র আল্ কুরআনে  রেখেছেন বা রাখার ব্যবস্থা করেছেন।

বান্দার মঙ্গলার্থেই দয়াময় আল্লাহ্ এ কাজটি করেছেন।

বান্দা যখন তার মালিককে ডাকে, তখন তিনি খুশি হয়ে যান, শয়তান চলে যায় নিরাপদ দূরত্বে, আল্লাহ্ পাকের নূরের আশ্রয়ে চলে যান সে ব্যাক্তি, সম্পুর্ন নিরাপদ।

আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম এর ফজিলত:

হাদীসে বর্ণিত: নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দেখলেন, দুজন ব্যক্তি একে অপরের সাথে প্রচন্ড ক্রোধে ঝগড়া করছিল, তিনি হযরত ওমর (রা:) কে বলে পাঠালেন যে, কেউ যদি এই আয়াত টি পাঠ করে তাহলে তার রাগ থেমে যাবে, ওমর (রা:) তাদের মাঝে গিয়ে  বললেন - কেউ যদি আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম বলে, তাহলে তার রাগ থেমে যাবে, একথা শুনে একজন বললেন, আমি কি পাগল হয়েছি, অন্যজন বলতেই - তার রাগ থেমে গেল।

ওমর (রা:) পরবর্তীতে এই আমলের মাধ্যমে নিজের ক্রোধকে দমিয়ে রেখেছিলেন, তিনি ও বুঝতে পেরেছিলেন যে ক্রোধ ইবলিশ শয়তানের অস্ত্র, তাইতো তার মত ক্রোধি মানুষ ও নিজেকে সামলে নিতেন, সবর করতেন, সহ্য করতেন এবং আল্লাহর জিকির এ থাকতেন।

অশেষ ফজিলত এ আয়াতে:

আল্লাহ পাক যদি আপনার/ আমার সাথে থাকেন, সর্বদা দেখভাল করেন, আর কি চাই, এক একটি অক্ষরে ১ থেকে ১০, ১০ থেকে ১০০, ১০০ থেকে ৭০০ গুন নেকী আল্লাহ দান করতে পারেন, অবশ্যই আমলের গভীরতার উপর নির্ভর করে, সুতরাং অন্তর থেকেই এই আমলের গভীরতার মাধ্যমে শয়তান থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। 

সবখানে আজ শয়তানের আধিপত্য বিস্তার করছে, ব্যাক্তি থেকে জাতি, তারপর দেশ থেকে দেশ, এমনকি যেকোনো সময় বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, এই ইবলীশ শয়তানের অনুসারী সহচরেরা, এক আদম থেকে সৃষ্ট এই সেই মানুষ, সারা জাহানে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধরত, শয়তান দুর থেকে তামাশা দেখে, আর মুচকি হাসে,

বান্দার প্রতি কতটা মেহেরবাণী জড়িয়ে আছে রাব্বুল আলামীনের, যে তিনি এই সত্য উপলব্ধি করেই আয়াত টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন ।

শেষ কথা: দয়াময় আল্লাহ্ আমাদের চির শত্রু শয়তানের সান্নিধ্যে আপ্যায়ীত না হয়ে, পবিত্র বাণীর মারফতে তার আশ্রয়ে থাকতে বলছেন নির্ভয়ে। 

এই আয়াত পাঠকারী থেকে দূরত্বে অবস্থানরত শয়তান, তার কোনোই ক্ষতি করতে পারে না, নিজের ক্রোধকে সংযত রেখে, পবিত্রতার সহিত "আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম পাঠকারীর বিকাশে ভূমিকা রাখা প্রত্যেকের নিজস্বার্থেই প্রয়োজন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

এই আয়াত জিকিরকারী কোনো খারাপ বা মিথ্যার বশবর্তী হবে না, পাপকর্মে লিপ্ত হতে পারবে না, সুখ অনুভব হবে অন্তরাত্মায়, নিজের থেকে পরিবার তারপর আত্বীয় স্বজন, দেশ ও জাতি, ক্রমান্বয়ে সারা জাহানে সুখ, শান্তি ও আনন্দ বিরাজমান হোত।

মহান আল্লাহ পাক তার বান্দাদের প্রতি সহায়, যে, "আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম" এই আয়াত বা বাণী দ্বারা শিক্ষা দিচ্ছেন প্রিয় বান্দাদের, সুন্দরের পথে দুনিয়াতে সুখ, আর মৃত্যুর পর জান্নাতের আশায়, মহান রবের আশ্রয়ে থাকতে বলছেন, শয়তান থেকে দূরে থাকতে বলছেন।

সমাজ গঠনে সহায়ক ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় হাতিয়ার এই আয়াত জিকিরকারী

অশেষ ফজিলত ও রহমতে ভরা অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন এই আয়াত টি আমল করা উচিৎ।

শেষ কথা হয়না শেষ, আল্ কুরআনের  বাক্য বা আয়াত নিয়ে আলোচনা করবো পরবর্তী সিরিজ এ , 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এই আয়াত এর বাস্তব অর্থের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ নিয়ে আসছি "ইনশাআল্লাহ" ।  

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু।

মুহাম্মদ খলিল

Discover unknown truth in "THE HOLY QURAN"


বিষয়বস্তু: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের অবাস্তব আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ বিশ্ব নেতারা,

বর্তমান বিশ্বের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে আমরা এক গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছি। প্রযুক্তির বিকাশ, স্থাপত্য নির্মাণের চমক ও অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য আমা...