মালিকি-ইয়াওমেদ্দীন = বিচার দিবসের মালিক।


মালিকি-ইয়াওমেদ্দীন =  বিচার দিবসের মালিক।



আঊযুবিল্লাহি মিনাশ্শাইত্বোয়ানির রাজিম। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।


মালিকি যিনি মালিক 

ইয়াওমেদ্দীনবিচার দিবসের/দিনের

বিচার দিবসের একমাত্র মালিক রাব্বুল আলামীন, দয়াময় আল্লাহ্। 

আরশ কুরসিতে বসে তিনি এককভাবে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন, আল্লাহর হুকুম ছাড়া সেদিন কেউ কথা বলতে পারবে না, তিনি আল্লাহ-ই সেদিন একমাত্র বিচারক, মহা বিচারপতি। 

এই সেই বিচার দিবস !

কেয়ামত বা মহাপ্রলয় সংঘটিত হওয়ার পর পরই বিচার দিবসের শুরু

সেদিন প্রতিটি মানুষকে নগ্ন অবস্থায় পুনঃজীবিত করা হবে, বধীর, বোবা, দৃষ্টিহীন ও দিশেহারা অবস্থায় কবর থেকে উঠে সমবেত হবে, বিচার দিবসের মালিকের সামনে আখেরাতের ময়দানে, রাব্বুল আলামীন সেদিন পুঙ্খানুপুঙ্খ/ কড়ায়গণ্ডায় (অনু পরিমাণ) হিসাব নিবেন

সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ আদমকে সেদিন তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়া হবে, মানুষের কৃতকর্মের/ভালমন্দের ন্যায় বিচার হবে, ইনসানকে সেদিন অণু/পরমানু পরিমাণ নেক বা মন্দ কাজের ১০০% প্রতিফল দেওয়া হবে

মূর্খেরাই জ্ঞান অর্জন করে না বা সত্য বোঝে না, সত্যকে মেনে নিতে চায় না

শুধুমাত্র জ্ঞানীরাই রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দেখানো সুন্নত এর পথে চলে, বিচার দিবসের মালিকের সন্তুষ্টি অর্জনের আকাঙ্ক্ষায় সত্য সুন্দর পথে চলে, আল্ কুরআনের পথে চলে, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণে নেক আমল করে, সীমিত খরচ করে, আল্লাহর রাস্তায় ধৈর্য্য ধারণ করে, অপরকে সাহায্যকারী ও দানশীল হয়, আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে কলুষমুক্ত করে

দুনিয়াতে যে ন্যায়বিচার পায়নি, সেদিন তার প্রতি ন্যায্য বিচার হবে 

সেদিন বিচার হবে, লোভ, লালসার, অহংকারীর, অন্যের সম্পদ ভোগকারীর, পাথরসম কলুষিত হৃদয়ের মানুষগুলোর, বিচার হবে Bank balance এর, মালিক সেদিন বিচার করবেন মন্দ ক্রেতা/ বিক্রেতার, দুনিয়াতে যারা একে অপরকে ঠকিয়েছে তাদের, সেদিন বিচার হবে ন্যায্য দামের, বিচার হবে ওজনে কম দেয়ার, মহান রব সেদিন বিচার করবেন খাদ্যে ভেজাল মিশ্রন কারীর

বিচার দিবসে রাব্বুল আলামীন বিচার করবেন হালাল/হারাম উপার্জন কারীর 

বিচার দিবসের একমাত্র মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সেদিন বিচার করবেন কলুষিত রুহের, সেদিন বিচার হবে অন্যের জমি ভোগদখল কারীর, বিচার হবে দলিলে ভেজাল কারীর, বিচার হবে গায়ের জোরে আধিপত্য বিস্তার কারীর, বিচার হবে গরীব/অসহায় এর প্রতি জুলুমকারীর। বিচার হবে মিথ্যুক এর, পরনিন্দাকারীর, দুনিয়াতে যে ছিল কুদৃষ্টিকারী তার চোখের বিচার হবে, বিচার হবে তার যে গিবত করেছে

বিচার হবে প্রতিটি অঙ্গের, বিচার হবে মানুষের মন্দ কাজে ব্যবহৃত অঙ্গ/প্রত্যঙ্গের,
আল্লাহ পাক সেদিন হিসাব নিবেন যৌবনকাল কিভাবে অতিবাহিত করেছে তার

সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ মালিক সেদিন তার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব ইনসানের নামাজের হিসাব নিবেন, সময় বেঁধে দেয়া ওয়াক্তেই কেন আল্লাহকে সেজদা করেনি তার হিসাব নিবেন। প্রমাণ স্বরূপ প্রতিটি মানুষের অঙ্গ/প্রত্যঙ্গ, এমনকি লোম পর্যন্ত সাক্ষী হিসেবে কথা বলবে, মালিক সেদিন তাদের জবান খুলে দিবেন


বিচার দিবসে মহান রাব্বুল আলামীন হিসাব নিবেন সম্পদশালীর, তাকে যে সম্পদ আল্লাহ দিয়েছিল তা সে কোনপথে ব্যয় করেছে

সন্তানদের কোন পথে পরিচালিত করেছে তার হিসাব নিবেন, দুনিয়াতে রেখে যাওয়া সম্পদ সন্তানরা কিভাবে এবং কোন্ পথে ব্যয় করবে সে শিক্ষা দিয়েছিল কি না তার বিচার হবে
হিসাব নিবেন Bank Balance  এর, জমা-খরচ এর

এইজন্যই আল্লাহ পাক স্পষ্ট বলছেন:   জেনে রাখো তোমাদের ধন, সম্পদ ও সন্তান সন্ততি হচ্ছে পরীক্ষা মাত্র।   সূরা আনফাল, আয়াত:২৮

সেদিন বিচার দিবসে ইনসানকে পূনঃর্জীবীত করা হবে, থাকবে না কোন আয়ুস্কাল, মৃত্যু হবেনা, অমর থাকবে, জান্নাত কিংবা জাহান্নাম হবে আবাসস্থল, এটাই আল্লাহর বিধান
মানুষের সত্য বিবেক সেদিন সত্য মেনে নিতে বাধ্য হবে, মিথ্যা সেদিন পরাজিত হবে, সত্যের জয় হবেই হবে

লোভ-লালসাহীন সুন্দর একটা অন্তর তৈরি করে,মালিক-এর প্রেমে মত্ত থেকে সর্বদা তার জিকির করে, সেজদা করে, ঠিকভাবে নামাজ আদায় করে, হালাল উপার্জনকারী, সত্যবাদী ইনসানের জন্যেই সেদিন মহাপুরস্কার, বিচার দিবসের মালিক সেদিন তাদের পুরস্কৃত করবেন, বেহেশতে প্রবেশ করতে বলবেন, মহা সুখের আবাসস্থলে মনে যা চাইবে তাই পাইবে তৎক্ষণাৎ

আর সবচেয়ে বড় রহমত-দয়াময় আল্লাহ্ পাকের মধুর কন্ঠে আল্ কুরআনের সূরা: আর রহমান এর তিলাওয়াত শুনতে পাওয়া, রাব্বুল আলামীন কে স্বচোক্ষে দেখতে পাওয়া, বিচার দিবসের পর এসব নেয়ামত দেয়া হবে নেক আমলকারী বান্দাদের

স্পষ্টভাবে আল্লাহ পাক বলছেন, আমারা কি বাংলাও বুঝিনা ? নাকি বুঝতে চাই না, বিচার দিবসে রাব্বুল আলামীনের সামনে কি নিয়ে দাঁড়াব, কতটুকু আমরা তৈরি আছি একবারও কি ভেবে দেখেছি

দুনিয়াতে ধন, সম্পদ প্রাচুর্যের লোভে মানুষ কি না করছে, সম্পদের লোভে মানুষের অন্তর কলুষিত হয় বেশি, ধীরে ধীরে তার অন্তরে মোহর পড়ে যায়, পাথর হৃদয় হয়ে যায়, গাফেল হয়ে শয়তানের অনুসারী হয়ে যায়

মালিকের নির্দেশে সেদিন ফেরেশতারা পাপী বান্দাদের শৃঙ্খলিত করে, মাথার চুল আর পায়ের নোখ ধরে ধরে ছূড়ে মারবে জাহান্নামের আগুনে, যে আগুনের তাপ দুনিয়ার আগুনের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি প্রখড়, তবুও মানুষের মরণ হবে না, অমর, মৃত্যুহীন জীবন




সেদিন বিচার দিবসে ডানহাতে আমলনামা গ্রহনকারী নেক আমলের বান্দাগন থাকবে আল্লাহর যিকির এ মত্ত, ইয়া নফস, ইয়া নফসি
সূর্য আর সেই নেক ইনসানের মাঝে মেঘের মত ছায়া দান করবে পবিত্র আল্ কুরআন, যে দুনিয়াতে আল্লাহর বাণীর মর্যাদা দিয়েছে, তিলাওয়াত করেছে, এবং সেই অনুযায়ী আমল করেছে, আল্ কুরআন সেই আমল কারীকে সঙ্গে করে বেহেস্ত পর্যন্ত নিয়ে যাবে

রাসুল( সঃ) এর প্রদর্শিত পথে নিজেকে পরিচালিত মানুষের মধ্যে, তৃষ্ণার্ত নেকীবান্দাকে সেদিন কাওছারের শীতল পানি পান করতে দেয়া হবে, হিসাব সহজ হয়ে আল্লাহর আরশের ছায়ায় অবস্থান করবে, পুলসিরাত এর পুল পার হয়ে কাঙ্খিত গন্তব্য বেহেশতে প্রবেশ করতে বলা হবে। ইহাই সেই বিচার দিবস
বেহেশতে ও মানুষের জীবন হবে অমর, মৃত্যুহীন পরলৌকিক জীবন, সুখ আর সুখ, কোনপ্রকার অসুখ তাদের হবেনা - সীমাহীন আনন্দ ও শান্তি তাদের জন্যই

তাইতো রাব্বুল আলামীন বলেন : পার্থিব জীবন ক্রিয়া কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়, পরলৌকিক জীবনই তো প্রকৃত জীবন যদি তারা জানত।                        সূরা আনকাবুত, আয়াত: ৬৪ । 

 স্পষ্টভাবে আল্লাহ পাক বলছেন :

দুনিয়াতে ধন, সম্পদ প্রাচুর্যের লোভে মানুষ কি না করছে, সম্পদের লোভে মানুষের অন্তর কলুষিত হয় বেশি, ধীরে ধীরে তার অন্তরে মোহর পড়ে যায়, পাথর হৃদয় হয়ে যায়, গাফেল হয়ে শয়তানের অনুসারী হয়ে যায়

ধন সম্পদ ও প্রাচুর্যের লোভে মানুষ ভুলেই যায় যে, জীবনটা কত ছোট্ট, সময় খুব কম

ভেবে দেখুন, একদিন আয়ুস্কাল-এ মানুষ ২৪ ঘন্টার মধ্যে এ্যভারেজ ৮ ঘন্টা ঘুমায়, তাহলে ৬০ বৎসরের জীবনে মানুষ ২০ বৎসর-ই ঘুমায়, বা অচেতন অবস্থায় কাটিয়ে দিচ্ছে, কোথায় আছে সময়
বাকী ১৬ ঘন্টার মধ্যে ৮/১০ ঘন্টা কাটছে কর্মব্যস্ত জীবনে অর্থ উপার্জনে, ২৪ ঘন্টার বাকী ৬-৮ ঘন্টা পরিবার, পরিজন, সন্তানদের নিয়ে ভোগ বিলাস আর ছলনার মায়াজালে সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে,  অর্থ উপার্জনে এতটাই ব্যস্ত মানুষের কেউ কেউ সম্পদ ভোগ করার সময়ই পায়না, কোথায় সময় ?
কেউবা কম, কেউবা বেশি আয়ূ পাচ্ছি দুনিয়াতে, শিশু বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ পর্যন্ত আয়ুস্কাল-হঠাৎ, যে কোন মুহুর্তে আযরাঈল এসে যাচ্ছে জান্/ রূহ্ কবজ করতে, কোথায় সময় ?
চোখের সামনে চেনা জানা মানুষগুলো একে একে কবরবাসী হয়ে যাচ্ছে, গতকাল যে ছিল সাথে আজকে সে কবরবাসী, কোথায় সময় ? দুনিয়াতে আমাদের সত্যিই সময় খুব কম।

ভেবে দেখুন সাধারণ হিসাবে ৬০ বৎসর (এ্যভারেজ) জীবনে কতটা সময় পাচ্ছি ?

কত সুন্দর স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার পবিত্র বাণীর মারফতে, 

তাইতো রাব্বুল আলামীন স্পষ্টভাবে আল্ কুরআনে বলছেন :  তোমরা দুনিয়াতে অল্প সময়ই অবস্থান করেছিলে, যদি তোমরা জানতে।                                                                                                                         সূরা মুমিনুন। আয়াত: ১১৪ ।

সূর্যের প্রচন্ড প্রখড় তাপে সেদিন পাপী বান্দার মাথার মগজ টগবগিয়ে ফুটতে থাকবে, পানির পিপাসায় জিহ্বা নাভী পর্যন্ত বেড়িয়ে আসবে, তাদের দেয়া হবে ফুটন্ত গরম পানি, এই সেই বিচার দিবস



মালিক সেদিন হাসরের ময়দানে, সূর্যকে ইনসানের মাথার উপর, ১ মাইল দূরত্বে স্থাপন করবেন, সমতল ভূমির উপর মানুষকে সমবেত করা হবে নগ্ন অবস্থায়। কারো ডান হাতে অথবা কারো বাম হাতে আমলনামা (কৃতকর্মের দলিল) দেয়া হবে

এই সেই বিচার দিবস যার একচ্ছত্র অধিপতি একমাত্র আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন

বিচার দিবসের অধিপতি একমাত্র মালিক সেদিন বিচার করবেন কলুষিত রুহের।
সেদিন বিচার হবে দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচারের, বিচার হবে অন্যের ভিটামাটি নিজের প্রভাবে গ্রাসকারী ও ভোগদখল কারীর, বিচার হবে দলিলে ভেজালকারীদের, আধিপত্য বিস্তার কারীদের, গরীব/অসহায় এর উপর জুলুম ও নির্যাতনের কঠিন বিচার হবে

কেউ কেউ শুধরানোর ইচ্ছা থাকলেও আয়ুস্কাল-এ শুধরাতে পারে না, সময় পায় না, পথের দিশা খুঁজে পায়না, এভাবে যতক্ষণ না সে কবরবাসী হয়

তাইতো রাব্বুল আলামীন বলেন : প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল করে রেখেছে, এভাবে একপর্যায়ে তোমরা কবরের সাক্ষাত লাভ করবে।                 সূরা তাকাসুর, আঃ ১-২ 

রহমান/ দয়াময় আল্লাহ্ সেদিন বিচার করবেন মিথ্যাবাদী মিথ্যুকের। সেদিন বিচার হবে কুদৃষ্টিকারীর - দুইনয়নের

বিচার দিবসে মহান আল্লাহ পাক এর দরবারে উপস্থিত হতে হবে - কৃতকর্মের জবাব দিতে হবে এটাই চিরন্তন সত্য। যে অগ্রাহ্য করবে, সত্য জেনেও মানতেই চাইবে না, মালিক এর আযাবকে ভয় করবে না, তাদের জন্যই সেদিন বিচার দিবসের ব্যবস্থা

এটাই আল্লাহর বিধান, অপূর্ণ সৃষ্টি সেদিন পূর্ণতা লাভ করবে - মনুষ্য সৃষ্টির শেষ গন্তব্য, বেহেশতে কিংবা দোযখে প্রেরণের মাধ্যমে সৃষ্টির সমাপ্তি ঘটবে

শেষ কথা:  আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন বিচার দিবসে আমার/আপনার হিসাব সহজ করে দেন, ডানহাতে আমলনামা দেন, জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন, আমীন

আসুন,
আজ থেকে বিচার দিবসের জন্য তৈরি হয়ে যাই, জ্ঞানী হই, নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর শাফায়েত লাভ করতে পারি সেই উম্মত হই, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কন্ঠে উচ্চারিত আল্ কুরআনের বাণীকে নিজের জীবনে প্রতিষ্ঠিত করি, আমল করি, সহজেই বিচার দিবস পাড়ি দিয়ে পূলসিরাত পাড় হতে পারি। মালিক আমাদের সেই তৌফিক দান করুন, আমীন

পরিশেষে বলতে চাই :

সাচ্চা ইনসান ওহেয়্, যো আপনী পিছে মুঢ়কর দেখে, অওর আপনী কিয়েহুয়ে ভুলকো সূধারে   =   ( সত্যিকার মানুষ সেই, যে নিজের অতীতে ফিরে তাকায়, আর নিজের কৃত ভুলকে সংশোধন করে )
কেউ কেউ শুধরানোর ইচ্ছা থাকলেও আয়ুস্কাল-এ শুধরাতে পারে না, কোথায় সময় ?

বন্ধুরা, Discover unknown truth in "THE HOLY QURAN" এ আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে সাধারণ ভাষায় অনেকের কাছে জানা, আবার অজানা সত্য তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, ভুলক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, আল্লাহ পাক আমাকে ক্ষমা করেন, আল্লাহু-মাগফিরলী = হে আল্লাহ্ ক্ষমা করুন

পরবর্তী আয়াত:  ইয়া-কা নাবুদু  ওয়াইয়া-কা নাসতাঈন আমরা তোমারই ইবাদত করি ও তোমারই সাহায্য প্রার্থী

এই আয়াতটির গভীরতা ও বিশালতা অশেষ, কতযে রহমতে ভরা এই অলৌকিক বাণী, ভাষায় ব্যক্ত করা কঠিন, তারপরও আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে সাধারণ ভাষায় বলার চেষ্টা করছি

রাব্বী যিদনী ইলমা = হে রব জ্ঞান দান করুন


আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু 

মুহাম্মদ খলিল



আলহামদুলিল্লাহি রব্বীল আ-লামীন।


 আঊযুবিল্লাহি মিনাশ্শাইত্বোয়ানির রাজিম

 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম



সর্বপ্রথম,  যে আয়াত টি মহাগ্রন্থ আল্ কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, সেই আয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ, আশ্চর্যের বিষয় হলো এই এতবড় এবং অশেষ রহমতে ভরা অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন, প্রথম বাক্যের অর্থ, ফজিলত, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ খুব কমই দেখা গেছে, 
আসুন দেখি পড়ে বুঝার চেষ্টা করি যে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ পাক আমাদের কি বোঝাতে চেয়েছেন।

আলহামদুলিল্লাহি রব্বীল আ-লামীন

আলহামদু = সমস্ত প্রশংসা 
লিল্লাহি = আল্লাহর 
রব্বীল = যিনি রব
আ-লামীন = সারা জাহানের 

মূল অর্থ = সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি সারা জাহানের রব

আলহামদুলিল্লাহি = সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর,
রব্বীল আ-লামীন = যিনি সারা জাহানের রব

আল্ কুরআনের সর্বপ্রথম সূরা-ফাতিহা, এই সূরা কে উম্মূল কুরআনও বলা হয়।

সূরা ফাতিহার শুরু এই সর্বপ্রথম বাক্যেটিতে, পরম করুণাময় আল্লাহ আমাদের কি বোঝাতে চেয়েছেন, একটুখানি আন্তরিকভাবে অনুভব করার চেষ্টা করি।

আল্লাহ বলছেন, 
আলহামদুলিল্লাহি রব্বীল আ-লামীন = সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি সারা জাহানের রব = দয়াময় আল্লাহ পাক তার বান্দাদের শিখিয়ে দিচ্ছেন যে কিভাবে তার প্রশংসা করতে হয়

সারা জাহানে যদি কেউ সর্বোচ্চ প্রশংসার অধিকারী হয় বা থাকে সে আমাদের রব - তার জন্যেই সমস্ত প্রশংসা



দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সত্য পথ প্রদর্শক হিসেবে, আল্ কুরআন কে নাযীল করেছেন সে জন্য তিনি প্রশংসার অধিকারী, তাইতো তিনি প্রশংসিত রব

শেষ রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে শেষ উম্মতের জন্য দুনিয়াতে প্রেরণ, ও সারা জাহানের উম্মতের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ, রাব্বুল আলামীন তাইতো প্রশংসিত, তিনিই মহান

মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মাধ্যমে, আল্ কুরআন-কে নাযীল করেছেন বলেই তিনি আল্লাহ পাক প্রশংসিত, প্রতিটি মানুষের নিকট প্রশংসিত

পাপী কিংবা নেক ইনসানের রিযিককের ব্যবস্থা করেন দয়াময় আল্লাহ্, তাইতো তিনি প্রশংসিত, যারা রবের প্রশংসা করেনা তারাই তো প্রকৃত জালিম ও নেমকহারাম

খূটি বিহীন আসমান, ছাঁদ বিহীন পৃথিবী সৃষ্টি, সূর্যের আলো, চাঁদের কিরণ দিয়ে, মেঘ থেকে বৃষ্টি দানে যমিনকে উর্বর রাখেন তিনিই মহান আল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা রাব্বুল আলামীনের

বিভিন্ন রকমের মাটিতে বিভিন্ন রকমের ফসল উৎপাদন করান সুনিপুণ সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ কারিগর মহান রাব্বুল আলামীন, তাইতো তিনি প্রশংসিত রব, দয়াময় আল্লাহ

তারই আধিপত্য সমগ্র জাহানে, দৃশ্য ও অদৃশ্যের মালিক এক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। সারা জাহান বলতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন, সমগ্র জাহানে তার ই রাজত্ব



দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞান একমাত্র তারই

দৃশ্যমান = মানুষ, পশু, পাখী, কিটপতঙ্গ, গাছপালা, জমিনের অবকাঠামো, পাহাড়, নদী, মহাসাগর, সূর্য, চন্দ্র, আলো অন্ধকার সহ আরো অনেক কিছুই যে দৃশ্যমান তা আমরা অনেকেই জানি, এগুলো সারা জাহানের মালিকের রাজত্বে দৃশ্যমান। এই প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের

তদ্রূপ,
অদৃশ্যের জ্ঞানী সৃষ্টি তারই, তিনিই রব, একমাত্র আল্লাহ্

অদৃশ্য সৃষ্টি = মানুষের রূহ, মানুষের ইলম/জ্ঞান, মানুষের শ্বাস/নিঃশ্বাস,  গর্ভস্হান এর ভিতরে সৃষ্টির সময়কাল, বাতা , জ্বীন-জাতি, ফেরেশতা জাতি, ইবলীশ শয়তান, কবরজীবন, আখেরাত, বেহেস্ত, দোযখ, সাত আসমান এমনকি আল্লাহর আরশ, এগুলো গায়েবি বা অদৃশ্য সৃষ্টি মহান রাব্বুল আলামীনের, তাইতো তিনি প্রশংসিত রব।
সমগ্র জাহান তার ই অধীন, তিনি-ই সমস্ত প্রশংসার অধিকারী, তাইতো বলতে হয় আলহামদুলিল্লাহি রব্বীল আ-লামীন

রাতে ঘুমন্ত আমি ও আপনাকে সকালে কে জাগায় ? তিনিই মালিকিন্নাস = (মানুষের মালিক) ।

ভেবেছেন কি কখনো, ক্লান্ত, পরীশ্রান্ত, রাতে ঘুমন্ত মানুষটি যদি সকালে ঘুম থেকে না উঠত কি হোত ?
স্নিগ্ধ আবেশে, ক্লান্তি ঝড়িয়ে, ফুরফুরে মেজাজে, চাঙা দেহ মনে, নিষ্পাপ সূরতে সকালে তিনি তার বান্দাদের ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলেন, একমাত্র আল্লাহ্, তিনি প্রশংসার ঊর্ধ্বে।

আলহামদুলিল্লাহি রব্বীল আ-লামীন



পরিশেষেে : আমারা যদি হৃদয় ও মন দিয়ে এই আয়াত টির সরল বাংলা অর্থসহ বাস্তবজীবনে বর্ণনা, বিশ্লেষণ বোঝার চেষ্টা করি তাহলে অবশ্যই এটা বোধগম্য হবে যে, আলহামদুলিল্লাহি রব্বীল আ-লামীন আয়াত টির কত অশেষ রহমত, এ আয়াতের জিকির করা প্রতিটি বান্দার জন্য কতটা নেয়ামত পূর্ণ, কতটা অত্যাবশ্যকীয়

আসুন রাব্বুল আলামীনের জিকির করি, আলহামদুলিল্লাহি রব্বীল আ-লামীন

রাব্বী যিদনী ইলমা = হে আল্লাহ্ জ্ঞান দান করুন
Discover unknown truth in "THE HOLY QURAN" এ আমি যেন আমার সাধারণ, স্বাবলীল ভাষায়, পবিত্র আল্ কুরআনের বাণী মানুষের বোধগম্য করতে পারি, সেই ইলম আপনি আমাকে দান করুন, আলহামদুলিল্লাহি রব্বীল আ-লামীন। 

আমরা সৌভাগ্যক্রমে সর্বশেষ রাসূল হযরত মুহাম্মদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) এর উম্মত হতে পেরে সৌভাগ্যবান, তাইতো তিনি মহা প্রশংসিত রব, দয়াময় রহমান

সারা জাহানে উন্মোচিত ইসলামকে একমাত্র শান্তির ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করায় তিনি প্রশংসিত রব, আলহামদুলিল্লাহি রব্বীল আ-লামীন

এই আয়াতের ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ লিখে শেষ করা যাবেনা

তাইতো মহান রব নিজেই নিজের প্রশংসা করে বলেন = সারা জাহানের গাছগুলো যদি কলম হোত, আর সাগরের ও সাত সমুদ্রের পানি যদি কালি হোত, তবুও তোমার রবের গুণগান/প্রশংসার বাণী লিখে শেষ হবেনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।   সূরা লুকমান, আয়াত - ২৭ ।

বন্ধুরা,
 এর আগের পোস্টে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম-এ রাহমানির রাহিম শব্দগুলো নিয়ে ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি, তাইতো এবার পরবর্তী পোষ্টে এ ৩য় আয়াত নিয়ে আসছি 

মালিকি - ইয়াওমেদ্দীন = বিচার দিবসের মালিক

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু


মোহাম্মদ খলিল ।।।








WASSALATU - WAJJAKATA video

 WASSALATU - WAJJAKATA







ইসলামিক, ইসলামিক ভিডিও, ইসলামিক ভাইরাল ভিডিও, আউযুবিল্লাহি পাঠের ফজিলত, আল্ কুরআনের আলো, আল্ কুরআনের বাণী,#Quran #Islam #The truth on the way 

Discover unknown truth in "THE HOLY QURAN" is the best place to get true knowledge from THE HOLY QURAN in Bangla.
Discover unknown facts & feel fine from heart & soul,
LOVE each other as a brother & sister, may 'ALLAH' bless u as a Muslim.

If u sacrifice to anyone, "ALLAH" will sacrifice to u .

আসুন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ এই মহাপবিত্র আল্ কুরআনে বর্ণিত আয়াত থেকে ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাস্তব সত্য অনুধাবন করি, জান্নাতের পথে চলি, সারা জাহানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখি, 
প্রতিটি মানুষকে সত্যর বাণী শুনতে/ পড়তে সহযোগিতা করুন, ঈমানকে মজবুত করুন, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করুন।


ASSALAMUALAICUM - WA - RAHMATULLAHI WA BARAKATU.


বিষয়বস্তু: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের অবাস্তব আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ বিশ্ব নেতারা,

বর্তমান বিশ্বের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে আমরা এক গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছি। প্রযুক্তির বিকাশ, স্থাপত্য নির্মাণের চমক ও অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য আমা...