ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন


 ইয়্যা-কা নাবুদু  ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন = আমরা তোমারই ইবাদত করি ও তোমারই সাহায্য প্রার্থী।

আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শাইতোয়ানির রাজিম 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

সূরা ফাতিহার ৪নং আয়াত = ইয়্যা-কা নাবুদু  ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন।

অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন এই পবিত্র আয়াত টির মধ্যে রয়েছে আন্তরীক ভাব, রূহানী প্রশান্তি পাওয়া যায় এই বাণী গুলো পাঠ করলে।

একমাত্র প্রশংসার অধিকারী সারা জাহানের রব, দয়াময় ও  অসীম দয়ালু, বিচার দিবসের মালিক যিনি, আমরা তারই ইবাদত করি এবং তারই সাহায্য কামনা করছি, অনেক জ্ঞানগর্ভ কথা/ বাণী এই আয়াতগুলো। 
নামাজের মধ্যে বা যখনি, এই আয়াতটি হৃদয়ের গভীর থেকে অর্থ উপলব্ধি করে তিলাওয়াত করলে প্রশান্তি পাওয়া যায়, দুচোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না, এটাই সত্য, আলহামদুলিল্লাহ।

হৃদয়ে জমানো শতব্যাথা, বেদনা,দুঃখ, কষ্ট, আশা, আকাঙ্ক্ষা, পাপ, অন্যায়, ক্ষোভ, রিজিক, অভাব, অসম্মান, চাওয়া পাওয়া সহ সমস্ত কিছুর মালিক যিনি, আমরা তারই ইবাদত করি এবং তারই সাহায্য চাচ্ছি, হৃদয়ের গভীর থেকে ধ্যানমগ্ন বান্দা যখনি এই আয়াত  তিলাওয়াত করে, রাব্বুল আলামীন অত্যন্ত খুশী হয়ে যান।

দয়াময় ও পরম দয়ালু, সারা জাহানের প্রশংসিত রব এবং বিচার দিনের মালিক তুমি আল্লাহ, আমরা তোমারই ইবাদত করি - তোমারই সাহায্য চাই, বান্দার আধ্যাত্মিক রুহুথেকে ক্রন্দনরত হৃদয়ের বাণী পাঠ করার সাথে সাথেই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা পূরন করে দেন, হাসবিয়াল্লাহ, আল্লাহ-ই যথেষ্ট।



নিজ কথা : আমি দেশের সেরা মসজিদগুলোতে জুম্মার নামাজে দেখেছি খতীব, মাওলানা, শায়েখ, ইমাম সাহেবদের এই আয়াতটি পাঠ করেন ২ থেকে ৩ বার, আয়াতের গুরুত্ব অনুধাবন করে তারা দুচোখের পানি ছেড়ে দিয়েছেন, অঝরে কাঁদতে থাকেন।
পরবর্তীতে আমি নিজেও এর সত্যতা অনুভব করি, আলহামদুলিল্লাহ,অনেক,অনেক রহমতে ভরা এই পবিত্র আয়াতটি।

দুনিয়াতে মানুষের জীবনে বিভিন্ন ও বিচিত্র রকম ঘটনা ঘটে,কেউ সাংসারিক জীবনে দুঃখী, কেউবা ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় দুঃখী তো কেউ অসুস্থ হয়ে দুঃখী,কেউ অভাবে দুঃখী কেউবা প্রিয়জনকে না পেয়ে দুঃখী, কেউবা প্রিয়জনের কাছ থেকে কষ্ট পেয়ে দুঃখী,কেউবা ব্যবসার লোকসানে দুঃখী তো কেউ একটা ভাল চাকরির আশায় দুঃখী, আবার কেউ জানতে/অজান্তে গুনাহ মাফের আকাঙ্ক্ষায় দুঃখী, কেউবা পিতা মাতার স্বরণ করে দুঃখী।

শত দুঃখ কষ্ট নিয়ে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে যদি আবেগ আপ্লুত হয়ে, অন্তর থেকে এই আয়াতটি পাঠ করা যায় - ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন, আমরা তোমারই ইবাদত করি ও তোমারই সাহায্য প্রার্থী, রাব্বুল আলামীন সাথে সাথে সে আশা পূরণ করেন।

উম্মুল কুরআন সুরা ফাতিহায় বর্ণিত এই আয়াত গুলো পৃথিবী বিখ্যাত অনেকেই এর ফজিলত ও বরকত ব্যাখ্যা করেছেন,  হাদীস বিশারদদের মধ্যে বেশির ভাগই এই আয়াতের গুরুত্ব অনুধাবন করে, সূরা ফাতিহায় বর্ণিত প্রথম ৪ টি আয়াতকে ইছম আজম বলে আখ্যায়িত করেছেন। 



যেহেতু,  এই ৪টি আয়াতের মধ্যে রয়েছে আল্লাহ পাক এর প্রশংসা, সৃষ্টি জগতের বিশালতা, রাজত্ব, দয়াময় দয়ালু, সত্য ও ন্যায় বিচারের কঠোরতা, আধিপত্য, ইবাদতের যোগ্য, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণে সাহায্য প্রার্থনা, আন্তরিক চাওয়া পাওয়া সংযোজিত হয়েছে, পবিত্র আল্ কুরআনের সর্বপ্রথম এই বাণী গুলোই ইছম আজম।

আল্লাহ পাক এর প্রশংসা ও গুণগান সম্বলিত অর্থবোধক বাণীর মারফতে, অলৌকিক সাহায্য প্রাপ্তির আয়াত গুলোকেই ইছম আজম বলা হয়, ইছম আজম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ, পরবর্তী কোন সময় ।

মূলকথা = পবিত্র দেহ-মনে দয়াময় আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন এর কাছে নেক নিয়তে যা চাইবে তাই পাইবে, কাউকে তিনি আল্লাহ দুনিয়াতেই দিয়ে দেন, আবার কাউকে আখেরাতে দেওয়ার জন্য জমা রেখে দেন, তবে অবশ্যই দেন। আলহামদুলিল্লাহ।

বান্দা যখন তার মালিককে ডাকে - আর রাহমান, আর রাহিম, কতযে রহমতে ও নেয়ামতে ভরা কলিজা ঠান্ডা করা বাণী স্বয়ং আল্লাহ পাক আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন, এই আয়াত যদি অর্থসহ অন্তরে অনুভব করা যায় তাহলে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় আধ্যাত্মিক শান্তি কি ও কত প্রকার।

 Discover unknown truth in THE HOLY QURAN এ , আমি সহজ সরল বাংলা অর্থসহ আল কুরআনের বাণী গুলো অন্তরের গভীর থেকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি, ভুলক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

বাস্তব জীবনে দেখুন = নামাজ আদায় করছি, সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করছি, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করছি ঠিকই, কিন্তু অন্তরাত্মা থেকে অর্থ উপলব্ধি করতে পারছি না, যখনি তিলাওয়াত করছি মুখস্থ ছড়া বা কবিতার মতো পাঠ করছি।

সূরায় বর্ণিত আয়াত গুলো অর্থসহ হৃদয়ের গভীরে অনুভব করতে পারছি না শতকরা ৯৫ জনই, এটাই বাস্তব সত্য, চর্চার অভাবেই এমনটি হয়ে যাচ্ছে। 
আজ যদি আরবী তিলাওয়াত বা উচ্চারণের পাশাপাশি, বাংলা অর্থের চর্চা বাধ্যতামূলক থাকত, তাহলে বাঙালির নামাজ হোত মক্কা এবং মদীনা বাসীদের মত, মসজিদে সূরা ফাতিহা শুরু হওয়ার সাথে সাথে কান্নার আওয়াজ শোনা যেত, মুসুল্লিদের দুচোখ ভরে যেত পানিতে

প্রতিটি মানুষ আধ্যাত্মিক হয়ে আল্লাহর সাথে কথা বলত, আর চাইতো , ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন = আমরা তোমারই ইবাদত করি আর শুধুমাত্র তোমারই কাছে সাহায্য চাই, এ মালিক দয়াময় আমার মনের আশা পূরণ করে দেন, হাসবিয়াল্লাহ, দয়াময় আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন সর্বদা প্রস্তুত থাকেন তার বান্দাদের সাহায্য করার জন্য, দান করেন তার অফুরন্ত ভান্ডার থেকে। 
কারণ,
 


কারণ = রাব্বুল আলামীন বলেন,  
তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব ।

 সূরা গাফির, আয়াত - ৬০ ।


পিতার কাছে যদি কোন সন্তান কিছু আবদার করে কিছু চায়, আন্তরিকভাবে যে কোন প্রকারে হোক বাবা তার সন্তানের চাহিদা পূরণ করে দেন, যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ জীব ইনসানের রূপে, সবচেয়ে সুন্দর আকৃতি দিয়েছেন, সারা জাহান সাজিয়েছেন মানুষের জন্য, শুধুমাত্র আমরাই না, সারা জাহানের সমস্ত জীবের রিজিকদাতা, দয়াময় ও পরম দয়ালু, মানুষের চেয়েও সত্তর হাজার গুন বেশি আল্লাহর রহমতের মায়া, মমতা ও বান্দার প্রতি আল্লাহর এহসান, ভালবাসা, ফেরেশতা দের কোনো কিছু চাওয়া পাওয়ার সুযোগ নেই যেখানে মানুষের আছে, আল্লাহ পাক ফেরেশতা দের থেকেও বেশি কাছাকাছি হয়েছেন ইনসানের, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মেরাজ এর মাধ্যমে, তিনিই দয়াময় পরম করুণাময় আল্লাহ, তাইতো রাব্বুল আলামীন বান্দার ডাকে সাড়া দেন ঠিকই আমরা ধ্যানমগ্ন হয়ে তার সাথে কথা বলতে পারি না।
সুতরাং ভুল আমাদেরই, আমরাই আন্তরীকভাবে চাইতে জানি না, রহমান দয়াময় আল্লাহ পাক অবশ্যই দিবেন।

আমরাই তো আল্লাহর সাহায্য চাইতে পারছি না, তিনি কিভাবে দিবেন, কি দিবেন?

মুখে মুখে মুখস্থ বলছি ঠিকই ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন, কিন্তু ধ্যান চলে যাচ্ছে অন্য জায়গায়, চিন্তা করছি অন্য কিছু, মুখে বলছি এককথা অথচ চিন্তা করছি অন্য কথা, মুখে পড়া বাণীর সাথে নফসের চিন্তাশক্তির মিল থাকতে হবে, তবেই রূহানী প্রশান্তি পাওয়া যাবে।

সুতরাং, নিজ কন্ঠে উচ্চারিত আল্ কুরআনের আয়াতের শাব্দিক অর্থ বুঝে, পবিত্র রূহ থেকে ধ্যানমগ্ন হয়ে আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ কারী বান্দাই সাহায্য পাওয়ার যোগ্য, রাব্বুল আলামীন তাকেই তৎক্ষণাৎ দান করেন।



তাইতো এই আয়াতটি যখনি তিলাওয়াত করা হয় - ইয়্যা-কা নাবুদু ওয়াইয়্যা-কা নাসতাঈন = এ মালিক আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি, অন্য কারো নয়, তোমার কাছেই সাহায্য চাই, অন্য কারো কাছে নয়, তুমি আমাদের সাহায্য কর রাব্বুল আলামীন, তিনি অবশ্যই সাহায্য করবেন। কত মধুরতম বাণী এটি ? হৃদয়ের গভীরে প্রশান্তিতে ভরে যাবে।

শেষকথা:
আমরা সারা জাহানের প্রশংসিত রব, দয়াময় ও পরম দয়ালু, বিচার দিবসের মালিক এক আল্লাহর ইবাদত করি এবং তারই সাহায্য কামনা করি, রাব্বুল আলামীন আমাদের প্রার্থনা কবুল করুন। আমীন।

আসুন, আমরা সেই সত্বার ইবাদত করি অন্তরের অন্তস্থল থেকে, যিনি সর্বোচ্চ প্রশংসার অধিকারী, দয়াময় ও পরম দয়ালু, বিচার দিনের একমাত্র মালিক, সারা জাহানের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করি, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যানে পবিত্র রূহ-কে বেহেশতের পথে পরিচালিত করি, আমীন ।

পরবর্তী আয়াত থেকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ নিয়ে আসছি, ইনশাআল্লাহ, 
ইহ্দিনাস সীরাতাল মুস্তাকিম = আমাদের সোজা-সরল পথে পরিচালিত করুন।

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতু।

মুহাম্মদ খলিল ।



বিষয়বস্তু: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের অবাস্তব আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ বিশ্ব নেতারা,

বর্তমান বিশ্বের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে আমরা এক গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছি। প্রযুক্তির বিকাশ, স্থাপত্য নির্মাণের চমক ও অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য আমা...